৪ আগস্ট, ২০১৯ ২২:২৭
বৈধ-অবৈধ পথে

মিয়ানমার থেকে অবাধে আসছে গবাদিপশু

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম:

মিয়ানমার থেকে অবাধে আসছে গবাদিপশু

ফাইল ছবি

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে বৈধ-অবৈধ পথে গবাদিপশু আসছে প্রতিদিন। বৈরি আবহাওয়ার কারণে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর গত ৫ দিন ৩৭টি ট্রলারে মোট ৬ হাজার ২১৮টি গবাদিপশু বৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে। এর বাইরে রাতের আঁধারে অবৈধ পথেও আসছে গবাধিপশু।

টেকনাফ শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৩ সাল থেকে টেকনাফের সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিটি গরু-মহিষ আমদানি বাবদ ৫শ ও ছাগল প্রতি ২শ টাকা হারে রাজস্ব আদায় করা হয়। গত ৫ দিনে এতে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২৬ লাখ টাকার বেশি। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বাধা না দিলে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এবার মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ গবাদিপশু আমদানির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

করিডোরের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম জানান, বৈরি আবহাওয়া কারণে কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর গত ৫দিনে ১ হাজার ৩৭০টি গবাদিপশু মিয়ানমার থেকে আমদানি করেছি। পরিস্থিতি ভাল থাকলে কোরবানি পর্যন্ত অর্ধলাখের মতো গরু-মহিষ ও ছাগল আমদানি হতে পারে। চাহিদা থাকায় দামও ভাল পাচ্ছি আমরা। গবাদি পশু আমদানি এবং ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি এবং কোথাও কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। এই ভাবে আমদানি অব্যাহত থাকলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাজারে এবারের কোরবানে পশুর সংকট হবে না বলে মনে করি। তবে কোনো কোনো অসাধু ব্যবসায়ী রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য চোরাই পথেও গবাদিপশু আমদানি করছে। এটা আমাদের জন্য ক্ষতিকর।

টেকনাফের ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ মেম্বার বলেন, প্রতিবারের মতো স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশুর জন্য ঝুঁকেছেন মিয়ানমারের দিকে। মিয়ানমার থেকে প্রচুর পশু আসছে শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে। এসব পশু টেকনাফ সদরের গরু বাজারে, টেকনাফ মিঠাপানির চড়া, সাবরাং ইউনিয়ন কমপ্লেক্স, শাহপরীর দ্বীপের নাফনদীর বেড়িবাধ ও পুরাতন বাজারের বেশ কয়েকটি স্থানে পশুর হাট জমে উঠেছে। এছাড়া কোনো কোনো ব্যবসায়ী কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামেও আনা শুরু করেছেন ব্যবসায়ী।

টেকনাফের শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দীন বলেন, মিয়ানমারের পশু আমদানী করে এই করিডোর রাজস্বে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। গত সোমবার থেকে পশু আসা শুরু হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র করিডোর শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে মিয়ানমার থেকে গত মাসে ৬ হাজার ৭৪৪টি গরু ও ৩ হাজার ৩৫১টি মহিষ আমদানি করে ৫০লাখ ৪৭হাজার ৫০০ টাকার রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়। এ স্থলবন্দর থেকে সদ্যসমাপ্ত জুলাই মাসে প্রায় ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে। তবে পশু আমদানি অব্যাহত থাকলে রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই দীপক বিশ্বাস জানান, শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আসছে। বেপারি-ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে পশু সরবরাহের ক্ষেত্রে পথে যেন কোনো চাঁদাবাজি না হয় তাও নজরে রাখা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ মনির জানান, শুরুতে গত বছরের তুলনায় মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি কম হয়েছে। তবে কোরবানি সামনে রেখে আমদানিকারকরা পশু আমদানি বাড়াচ্ছেন। মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি হলেও করিডোরে নেই কোনো ব্যাংক ও পশু রাখার সুব্যবস্থা। এ জন্য নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমদানিকারক ও পাইকারদের।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর