চট্টগ্রাম মহানগরের যানজট নিরসনে আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণে ৮ দশমিক ১০ একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন মিলেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিটি কর্পোরেশন শাখা এ সংক্রান্ত চিঠি আজ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাছে প্রেরণ করে। এর মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা নিরসন হলো বলে জানা যায়। নগরের কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। ২৫ হাজার বর্গমিটারের ড্রেনজসহ মোট ১৬ একর জায়গায় নির্মিত হবে টার্মিনাল। এর মধ্যে চসিক অধিগ্রহণ করবে ৮ দশমিক ১০ একর এবং ৮ একর ভূমির মালিক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের।
চসিকের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘যানজট নগরের অন্যতম একটি সমস্যা। টার্মিনাল না থাকায় যানজট আরো তীব্রতর হচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা, ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এখন ভূমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ায় কাজটি আরেকধাপ এগুলো।’
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ইশতিয়াক উর রহমান বলেন, ‘দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে প্রতিদিন গড়ে চার হাজার ছোট-বড় ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি যাতায়াত করে। তাছাড়া তিন পার্বত্যজেলা, কক্সবাজারসহ আন্তঃজেলার বাস। এসব গাড়ি ব্যবস্থাপনায় টার্মিনাল অত্যন্ত জরুরি। দেরিতে হলেও নগরে একটি আধুনিক টার্মিনাল হচ্ছে। এটি অবশ্যই সুখের খবর।’
চসিক সূত্রে জানা যায়, ‘চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন ও যানজট নিরসনের জন্য বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ’ প্রকল্পটি গত বছরের অক্টোবরে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয় ২৬০ কোটি ৫ লাখ টাকা, জমির উন্নয়ন বাবদ তিন কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার, অবকাঠামো উন্নয়নে সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ কয়েকটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। সবশেষে নির্মাণ করা হবে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। টামিনালের মুখে থাকবে চারতলাবিশিষ্ট নানন্দিক ভবন। ভবনের প্রথম তলায় থাকবে সিটি বাস টার্মিনাল, আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল, যাত্রী নামার একটি লেন, যাত্রী ওঠার ২৫টি লেন, ১৪টি অতিরিক্ত লেন, ছাদযুক্ত বৃহদাকার খোলা হল রুম এবং তথ্য কেন্দ্র, অত্যাধুনিক ৫টি লিফট, এক জোড়া চলন্ত সিঁডি, ৩টি প্রশস্ত সিঁড়ি এবং প্রতিটি ফ্লোরে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বাথরুম। থাকবে ২২টি টিকিট কাউন্টার, ওয়াইফাই সুবিধাসহ যাত্রীদের বসার জায়গা, লাগেজ কক্ষ, ট্যাক্সি বুকিং বুথ, প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র, খাবার দোকান, ৩০টি কার এবং ট্যাক্সি পার্কিং, ৬টি পেট্রোল পাম্প, ৬৯টি বাস ডিপো, ১৭টি ওয়ার্কশপ এবং সার্ভিসিং সেন্টার, ৪টি সাভির্সিং লাইন ও ৮টি রক্ষণাবেক্ষণ ওয়ার্কশপ লাইন। দ্বিতীয় তলায় থাকবে রোস্তোরা, সুভ্যেনির সভা, এসি বাস যাত্রীদের বসার জায়গা। তৃতীয় তলায় বাস কোম্পানিগুলোর অফিস, টার্মিনাল ফ্যাসিলিটিজ এবং প্যানোরোমা রেস্টুরেন্ট, বাস কর্মচারীদের বেডিং, কমনরুম, টয়লেট। থাকবে কারিগরি সুবিধা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার