চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা নারী লাকীর ভুয়া পরিচয়পত্রের তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে অন্তত ৪৬ টি ভুয়া এনআইডির তথ্য ইসির সার্ভারে থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়া রোহিঙ্গা নাগরিকসহ এতগুলো ভুয়া এনআইডি কিভাবে সার্ভারে ঢুকলো, তার খোঁজে নেমেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এই ঘটনা তদন্তে বৃস্পতিবার চট্টগ্রামে যাচ্ছেন জাতীয় পরিচয়পত্র বিভাগের একটি কারিগরি দলসহ বিশেষ টিমের সদস্যরা।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় সার্বিক বিষয়ে যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হয়েছি, এতে ভুয়া তথ্য দিয়ে সার্ভারে রোহিঙ্গা নাগরিকসহ ভুয়া এনআইডিগুলো চট্টগ্রাম থেকে করা হয়নি। যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখতে ঢাকা থেকে একটি বিশেষ টিম চট্টগ্রাম সফরে আসছেন বৃস্পতিবার। তবে এ ঘটনার পর নির্বাচন অফিসের সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া সার্ভারে এনআইডি কার্ড দেখা যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এর সাথে কারা জড়িত ও কাজটি কিভাবে ও কোথা থেকে করা হয়েছে যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অধিকতর তদন্তের জন্য ঢাকার একটি টিম চট্টগ্রামে আসছে। রোহিঙ্গা নারীর এনআইডিটি চট্টগ্রাম থেকে করা হয়নি। এ রকম আরও ৪৬ টি ভুয়া এনআইডি পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এনআইডি কার্ডে উল্লেখিত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাকী মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা নন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেখানকার একটি এলাকায় সে কিছু দিন ছিল বলে জানা গেছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রটি তৈরি করার কাজটি করে থাকতে পারে।
জানা গেছে, পরিচয় গোপন করে রমজান বিবি নামের রোহিঙ্গা নারী ‘লাকী’ নাম দিয়ে স্মার্টকার্ড উত্তোলনের জন্য এনআইডি সাথে নিয়ে গত ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যান। তার এনআইডি কার্ডটি দিয়ে সার্ভারে খোঁজ করলে লাকীর যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত আছে বলে দেখানো হয়। যেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর - ১৯৯২১৫১৩৭৭১০০০৬২৯। ঠিকানা লেখা আছে স্বামী: নজির আহম্মদ, পিতা: হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের আব্দুর সালাম ও মাতা শাহেদা বেগম। সার্ভারে এটি ২০১৯ সালে আপলোড করা হয়। যার নিবন্ধন ফরম নম্বর ৪১৮৬৬৩৬৮, ভোটার সিরিয়াল নম্বর-১৭৬১, ভোটার এরিয়া কোড-মির্জাপুর (২ নম্বর ওয়ার্ড) (১২৯০)।
লাকী আকতারকে আটক করে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনা তদন্তে কোতোয়ালি থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল আলমকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আরেক সদস্য হলেন- পাহাড়তলী থানা নির্বাচন কর্মকর্তা এম কে আহমদ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার