চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে আরো একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য এক হাজার ৯২১ একর জমির দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন অথরিটি (বেজা) বঙ্গোপসাগর তীর ঘেষা পাঁচটি মৌজায় বৃহৎ আকারের আরেকটি অর্থনৈতিক জোন গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বৃহৎ মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ হয়। ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে শুরু হয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার বিশাল কর্মযজ্ঞ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সীতাকুন্ডে পাঁচ মৌজার এক হাজার ৯২১ দশমিক ৪৪ একর জমির ওপর অর্থনৈতিক জোন করার উদ্যোগ নেয় বেজা। এর মধ্যে গুলিয়াখালী মৌজায় ২৭৭ দশমিক ১১ একর, বাগাচতর মৌজায় ৩৮৮ দশমিক ৫৫ একর, সৈয়দপুর মৌজায় ১৩৬ দশমিক ৩৮ একর, বাগখালীতে ৫৫৬ দশমিক ১২ একর ও ভাটেরখীল মৌজার ৫৬৩ দশকি ২৮ একর জায়গা বন্দোবস্তের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এর মধ্যে গুলিয়াখালী, সৈয়দপুর, বাগখালী ও ভাটেরখীল মৌজার ১ হাজার ৫৩২ দশমিক ৮৯ একর জায়গার দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত প্রস্তাব গত ১৬ মে পৃথক স্মারকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। এরপর ২২ মে পাঠানো হয়েছে বগাচতর মৌজার ৩৮৮ দশমিক ৫৫ একর জমির বন্দোবস্ত প্রস্তাব।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের উন্নয়নে শিল্পায়নকে গুরুত্ব দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের পর সীতাকুন্ডে আরো একটি বড় শিল্পজোন গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ শিল্পজোনের জন্য ১ হাজার ৯২১ দশমিক ৪৪ একর জায়গার বন্দোবস্ত প্রস্তাব ইতোমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’
বেজা সূত্রে জানা যায়, ৩০ হাজার একরের মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বেজা। এই শিল্পাঞ্চলে পরবর্তী ১৫ বছরে পর্যায়ক্রমে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পুরোদমে বাস্তবায়ন হলে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করা সম্ভব হবে। মীরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলে অত্যাধুনিক রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা, টেক্সটাইল শিল্প, চামড়া শিল্প, প্লাস্টিক কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত কারখানা, ওষুধ শিল্প, অটোমোবাইল শিল্প, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, ইস্পাত শিল্প ও পাওয়ার প্লান্টসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানা নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে শিল্প স্থাপনে উপযোগী করার জন্য ইতোমধ্যে সাড়ে ৫০০ একর ভূমিতে কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে স্থাপিত হবে ২০০টি কারখানা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল