৫ জুন, ২০২০ ২১:৩৩

অজ্ঞাত রোগীর সেবক সেই নেসার এখন করোনা যোদ্ধা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

অজ্ঞাত রোগীর সেবক সেই নেসার এখন করোনা যোদ্ধা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৮০০ অজ্ঞাত রোগীর সেবা করেন অজ্ঞাত রোগীর সেবকখ্যাত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার। করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর তিনি এখন করোনা রোগীর সেবায় নিয়োজিত অন্যতম যোদ্ধা। 

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের সেবায় নেসার কাজ করছেন প্রতিনিয়ত। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সমুহে তিনি অবিরত অক্সিজেন, অক্সিমিটার, সুরক্ষা সামগ্রী, মাস্কসহ নানা সামগ্রী দিয়ে আসছেন। আজ শুক্রবারও চমেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ৫০জন রোগীর জন্য দেওয়া হয় রাতের খাবার। প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চমেক হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে নিজের বাবার অন্তিম যাত্রার পর থেকে অজ্ঞাত রোগীর সেবা করে আসছেন।

জানা যায়, করোনার প্রকোপ দেখা যাওয়ার পর থেকে নেসার নীরব যোদ্ধা হিসেবে সবার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। চমেক হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, ফিল্ড হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল ও হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে করোনার চিকিৎসায় নানা সমস্যা-সংকট নিরসনে কাজ করছেন। জেনারেল হাসপাতালে দুইজন নমুনা সংগ্রহকারীকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি যারা তার নিজের প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার টাকা করে বেতনে কর্মরত। তার উদ্যোগে চমেকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে দেওয়া হয়েছে দুইটনের এসি। চমেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের জন্য দেওয়া হয় ৩টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ৩০ জন নার্সের জন্য কেএন-৯৫ মাস্ক, ডিজিটাল প্রেসার মেশিন, ১ হাজার গ্লাবস ও জীবাণুনাশক স্প্রে।

অজ্ঞাত রোগীর সেবক খ্যাত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার বলেন, ‘করোনা রোগ নিয়ে মানুষ কত কষ্টে আছে তা হাসপাতালে গেলেই বুঝা যায়। তাছাড়া সরকারি উদ্যোগের পরও বিভিন্ন হাসপাতালে আছে নানা সংকট। তাই আমি সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিত্তবান মানুষদের অনুরোধ করে অক্সিজেন, অক্সিটিমার, পিপিই, কেএন-৯৫ মাস্ক, ডিজিটাল প্রেশার মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রি সরবরাহ করছি। মানুষও অনেক আন্তরিক। তবে এসব মহৎ মানুষরা তাদের নাম প্রকাশ করেন না। সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’   

জানা যায়, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য আসা রোগীদের চিৎকার করে ডাকতে হতো। ভিড়ের মধ্যে অনেকে তা শুনতই না। এ সমস্যা দেখে নেসার একজন দানশীল ব্যক্তির সহায়তায় সেখানে সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করেন। এখানকার দুইজন নমুনা সংগ্রহকারী তার চাকরি করা প্রতিষ্ঠানের বেতনে কর্মরত। তাছাড়া এ হাসপাতালে ২০০ পিপিই দেওয়া হয়। 

অন্যদিকে, বিটিআইটিতে দুইজন নমুনা সংগ্রহকারী দেওয়া হবে আগাঁমীকাল শনিবার থেকে। কর্মরত চিকিৎসক-নার্সদের জন্য দেওয়া হয় কেএন-৯৫ মাস্ক ও ২০০ পিপিই। রেলওয়ে হাসপাতালে দেওয়া হয় ৩টি অক্সিজেন, অক্সিমিটার, ডিজিটাল প্রেসার মেশিন, জীবাণুনাশক স্প্রে মেশিন, ৩০টি মাস্ক ও গ্লাভস। হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে দেওয়া হয় ২টি অক্সিজেন, ডিজিটাল প্রেসার মেশিন, ১ হাজার গ্লাভস, মেডিকেল সামগ্রী ও মাস্ক। চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে দেওয়া হয় হ্যান্ড গ্লাভস, পিপিই ও এন-৯৫ মাস্ক।


বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর