ডাকসুর একমাত্র নারী ভিপি, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মাহফুজা খানম আর নেই। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে অসুস্থতা বোধ করলে তাকে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কেন্দ্রীয় খেলাঘরের চেয়ারম্যান ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহফুজা খানমের নামাজে জানাজা আজ বাদ আছর তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাস মসজিদে (ইন্দিরা রোডের বাসভবনের পাশে) অনুষ্ঠিত হবে।
আগামীকাল বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ডাকসুর ইতিহাসে একমাত্র নারী ভিপি মাহফুজা খানমের জন্ম কলকাতায় ১৯৪৬ সালের ১৪ এপ্রিল। তিনি ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং ১৯৬৭ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মনোনয়ন পেয়ে ১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন।
১৯৬৮ সালে লন্ডন সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেলেও তৎকালীন মোনায়েম সরকার তাকে পাসপোর্ট দেয়নি।
বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করা মাহফুজা খানম মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্যও ছিলেন তিনি।
সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের লেখাপড়ার সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি। সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষার আর্থিক তহবিলের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৭টি শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন মাহফুজা খানম।
মাহফুজা খানম ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে প্রখ্যাত আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদকে বিয়ে করেন। তারা দুই পুত্র ও এক মেয়ে সন্তানের জনক-জননী।
মাহফুজা খানম ২০১২ সালে নারী শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ‘বেগম রোকেয়া পদক’ লাভ করেন। তিনি ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট ‘অনন্যা শীর্ষ দশ ২০১৩’ পুরস্কার ও সম্মাননা পান। এছাড়াও বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আর টিভি থেকে ‘জয়া আলোকিত নারী-২০১৭’ পুরস্কার লাভ করেন। ২০২১ সালে শিক্ষা বিভাগে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ