করোনা প্রাদুর্ভাবের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে চলছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)’র মানবিক কার্যক্রম। পেশাগত দায়িত্বে বাইরে গিয়ে নগরীর প্রত্যেক থানায় চালু করা হয়েছে মানবিক পুলিশিং কার্যক্রম। জটিল রোগীদের জন্য ফ্রি আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, গাড়ি সার্ভিস, অক্সিজেন ও প্লাজমা ব্যাংকসহ নানান কার্যক্রম চালু করেছে। মহামারীর এ সময়ে পুলিশের এমন মানবিক কার্যক্রমের ফলে পাল্টে যাচ্ছে পুলিশ নিয়ে সাধারণ মানুষের গতানুগতি ধারণা।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘করোনাকালে পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে মানবিক সেবা কার্যক্রম চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ফ্রি অক্সিজেন, প্লাজমা, অ্যাম্বুলেন্সসহ নানান সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এসব মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাই। তাদের আস্থা অর্জন করতে চাই।’
জানাযায়, করোনা প্রাদুর্ভাবের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে নগরীর ১৬ থানা পুলিশকে মানবিক কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেন কমিশনার। পাশাপাশি সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রম পুরোদমে চালু করা হয়। এ হাসপাতালে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া চিকিৎসা সেবা। এমনকি বিনামূল্যে করা হয় করোনা টেস্ট। টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ। করোনা রোগীদের অক্সিজেন সেবা নিশ্চিতে প্রত্যেক থানায় চালু করা হয়েছে অক্সিজেন ব্যাংক। নির্ধারিত নাম্বারে ফোন করলেই পুলিশ সদস্যরা পৌঁছে দিচ্ছেন অক্সিজেন সিলিন্ডার। একই ভাবে চালু করা হয়েছে প্লাজমা ব্যাংক। করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দিতে প্রত্যেক থানায় চালু করা হয়েছে ফ্রি গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। এ সেবার মাধ্যমে প্রত্যেক দিন শত শত অসুস্থ ব্যক্তিকে বিনামূল্যে হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। মুমূর্ষু রোগীদের জন্য চালু করা হয়েছে ফ্রি আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। নগরবাসীর জন্য এ সেবাটিও বিনামূল্যে দিচ্ছে পুলিশ। করোনাকালীন সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া জনসাধারণের মাঝে নিয়মিতভাবে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সিএমপি। করোনা টিকা গ্রহণ প্রত্যাশিদের জন্য চালু করা হয়েছে টিকা নিবন্ধন সার্ভিস। এ সেবার আওতায় পুলিশ সদস্যরা সাধারণ লোকজনকে করে দিচ্ছে টিকা নিবন্ধন। এছাড়া ফ্রি মাস্ক ও করোনা সুরক্ষা সামগ্রীও বিতরণ করা হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘এ সঙ্কটকালীন মুহুর্তে আমরা মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। করোনার শুরু থেকেই সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে কাজ করেছি। যেহেতু এখন আক্রান্তের সংখ্যা বেশি তাই অক্সিজেন ও এম্বুল্যান্স সেবা চালু করেছি।’
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন