চট্টগ্রামে প্রাচীন ঐতিহ্যের স্মারকখ্যাত ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলা এবং মেলা করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ কমার পর এ বছরও জব্বারের বলী খেলা ও মেলা হচ্ছে না। এছাড়া লালদীঘির মাঠও উন্মুক্ত না হওয়ায় বলী খেলা ও মেলা হচ্ছে না। বুধবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন। উপস্থিত ছিলেন মেলা কমিটির সভাপতি চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাবেক কমিশনার এ এস এম জাফর, সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল।
লিখিত বক্তব্যে মুহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে মেলা স্থগিত করা হয়। মহামারী প্রতিরোধে গণটিকা প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যকর কর্মসূচির কারণে বর্তমানে দেশ ও জাতি অনেকটা নিরাপদে। দেশে ইতোমধ্যে অনেক মেলা ও উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিগত ১১০ বছর ধরে এই বলী খেলা লালদীঘির মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। ঐতিহাসিক এই লালদীঘির মাঠ শত বছর ধরে অনেক ঘটে যাওয়া ইতিহাসের সাক্ষী। তার স্মৃতি ধরে রাখতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রশংসার দাবিদার। বর্তমানে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা মাঠটি এখনও উন্মুক্ত করা হয়নি।
মেলা কমিটির সভাপতি চসিক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, মাটি ও মানুষের খেলা এই জব্বারের বলী খেলা। করোনার কারণে দুই বছর হয়নি। এ বছর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ বছরও আয়োজন করতে পারছি না। বহু ইতিহাসের সাক্ষী লালদীঘি মাঠেই বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে লালদীঘি ময়দানকে ঘিরে ঐতিহাসিক ছয় দফার স্মৃতি সংরক্ষণে ‘নগরীর লালদীঘি মাঠ সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। মাঠটি উন্মুক্ত করা হয়নি। যদি এটি আগামী বছর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা আয়োজন করবো।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রাম শহরে এই বলীখেলা অনুষ্ঠানের প্রচলন হয়। ১৩১৬ বাংলার ১২ বৈশাখ, ১৯০৯ সালে প্রথম এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত আসর নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়। এই বলী খেলা উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে মেলা চলে, যা প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়।
ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর রাষ্ট্রীয় এই মেলার পরিধি ও জনপ্রিয়তা ব্যাপকতা লাভ করে। চট্টগ্রাম পৌরসভার পর সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও গণমাধ্যমের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আবদুল জব্বার স্মৃতি স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটি প্রতি বছর ১২ বৈশাখ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে এসেছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর