১৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৪:৫৩

পাঁচ খুনে 'পেশাদার নয়': সিআইডি

অনলাইন ডেস্ক

পাঁচ খুনে 'পেশাদার নয়': সিআইডি

নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল এলাকার একটি বাসায় একই পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় জড়িতরা ‘পেশাদার নয়’ বলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত ও সংগ্রহ করা বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে এমনটাই দাবি করছে সিআইডি।

শনিবার রাতে শহরের দুই নম্বর বাবুরাইল এলাকায় পাঁচতলা একটি ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে দুই শিশুসহ পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন তাসলিমা (৪০), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), জা লামিয়া (২৫) ও তাসলিমার ভাই মোর্শেদুল (২০)। 

তাসলিমার ননদ হাজেরা বেগম বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর বাবুরাইল খানকাহ শরিফ-সংলগ্ন আমেরিকা প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের ষষ্ঠ তলা ভবনের নিচতলার উত্তর পাশে তাসলিমা তার স্বামী ড্রাইভার শফিক ও সন্তানসহ ভাড়া থাকতেন। গতকাল রাত ৮টায় তিনি তাসলিমাদের বাসায় এসে ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ দেখতে পান এবং ফ্ল্যাটটি থেকে রক্ত বের হয়ে আসতে দেখে বিষয়টি বাড়িওয়ালাকে জানান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। 

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, বাসাটি সারা দিন বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। এ বাসার ঘর থেকে রক্ত বের হয়ে আসতে দেখে স্থানীয় জনতা সেখানে ভিড় জমায়। পরে তারা পুলিশকে খবর দেয়। এরপর স্বজন, র্যাব ও পুলিশ একই সময় তালা ভেঙে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাসলিমার খালাতো ভাই দেলোয়ার হোসেনসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কোনো বিরোধের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তবে খুনের ধরন দেখে মনে হয়েছে, খুনিরা অপেশাদার। কারণ নিহতদের আঘাত করে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। পরে তাদের গলা কেটে হত্যা করা হয়। 

নিহত তাসলিমার মা মোর্শেদা বেগম জানান, তাসলিমার স্বামী শাহীন ঢাকার ধানমন্ডিতে এক মালিকের প্রাইভেটকার চালান। সপ্তাহে এক দিন তিনি নারাণগঞ্জের বাসায় আসেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার চর ভেলাবাড়ি গ্রামে। গত নভেম্বর মাসে তাসলিমা ওই বাসাটি ভাড়া নেন। তাসলিমা সুদের ব্যবসা করতেন। তিনি অনেক টাকা ঋণী হয়ে যান। পাওনাদাররা তাকে চাপে রেখেছিল। তাসলিমার টাকা পরিশোধে তিনি (মোর্শেদা) জমিও বিক্রি করেছেন। তাসলিমার স্বামী শফিকও ঋণের টাকা পরিশোধে সহযোগিতা করতেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিহত ছেলে মোর্শেদুলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় মোর্শেদার। গতকাল কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে এক ব্যক্তিকে মোর্শেদা ওই বাসায় পাঠান। ওই ব্যক্তি এসে দেখেন, ফ্ল্যাট থেকে রক্ত বের হচ্ছে কিন্তু বাইরে থেকে তালা দেওয়া। গতকাল রাতে ওই বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, ফ্ল্যাটটির ভেতরে দুই রুম। একটি রুমে শিশুশ্রেণিতে পড়ুয়া সুমাইয়া ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শান্তর লাশ থেঁতলানো অবস্থায় রয়েছে। আরেকটি রুমের খাটের ওপর মোর্শেদুলসহ দুজন এবং মেঝেতে গলাকাটা অবস্থায় একজনের লাশ পড়ে রয়েছে। তাদের কাপড়চোপড় ছিল এলোমেলো। 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর