তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা গিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই সাহসী। তারা প্রত্যেকেই বীর। তাই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে বীর ব্যবহার করার জন্য সরকারি স্বীকৃতি আদায়ে শেষ তদবির করবো; যাতে মৃত্যুর পরও শুধু নাম দেখে সবাই জানতে পারে যে উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তথ্যমন্ত্রী এজন্য সকল জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের স্লোগান দেয়ার আহবান জানান যে, 'নামের আগে বীর ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই'।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে '৫২ থেকে বাংলাদেশ' টেরাকোটার ম্যুরালের উদ্বোধন করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মাননা ও চেক প্রদানের জন্য ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
হাসানুল হক ইনু আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে সমালোচনা করে অনেকে বলেন, 'আমি কঠিন কঠিন কথা বলি'। চিন্তা করে দেখলাম আমি কি বলি। সকালে ঘুম থেকে উঠে রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের গালি দেই। স্বাধীন বাংলাদেশে রাজাকাররা হলো শয়তানের মতো। রাজাকার বুড়া হলেও বদলায় না। যারা রাজাকারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করেন তারা নব্য রাজাকার। আর যারা তাদের সাথে নিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করে তারা পাকিস্তানি ভুত। আমি ক্ষমতার জন্য খুনীদের সঙ্গে কখনো আপোষ করিনাই। এজন্য দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে ছিলাম। '৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে আমরা অনেক এগুতাম। বর্তমান জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে আমরা অনেকদূর এগুচ্ছি। আমাদের আরো এগুতে হবে। যারা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে তাদের চেহারায় রাজাকারের ছাপ ছিল। ওরা ইতিহাস বিকৃত করেছে, খুনি রাজাকারদের মহিমান্বিত করেছে। আমাদের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। আমাদের যুদ্ধ ৭১ এর সেই রাজাকার, জঙ্গি, খুনিদের বিরুদ্ধে। যারা গণতন্ত্রের ঘোমটা পরে রাজাকারদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে। এদের চক্রান্ত বন্ধ করতে না পারলে, তাদেরকে পরাজিত করতে না পারলে বাংলাদেশ তালেবান, আফগানিস্তান, পাকিস্তানের পথে যাবে। রক্তাক্ত হবে জনপদ। আমি এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে চাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মেরাজ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাউছুল আজম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি রোকনউদ্দিন আহমেদ, সাবেক জেলা কমান্ডার সামিউল্লাহ মিলন, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর সাত্তার প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ