কুমিল্লার বরুড়ায় শিশু ইব্রাহিম খলিলকে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে হত্যার পর তার লাশ সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। ঘটনার পর গ্রেফতারকৃত নিহত ইব্রাহীমের চাচী হোসনেয়ারা বেগম মঙ্গলবার বিকালে কুমিল্লার ৭নং আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামের নিকট হত্যার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। পরে হোসনেয়ারা বেগমকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, জেলার বরুড়া উপজেলার শাকপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আবুল কাশেমের ছেলে স্থানীয় শাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র ইব্রাহিম খলিল (৭) গত ৩১ মার্চ বাড়ির পাশে ফুটবল খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এর ৩ দিন পর ২ মার্চ তাদের বাড়ির একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচানো অবস্থায় ইব্রাহিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পিতা আবুল কাশেম খবর পেয়ে সৌদি আরব থেকে গত ১ এপ্রিল দেশে ফিরেন। তিনি বাদী হয়ে বরুড়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ ওই বাড়ির আশপাশসহ নিকটজনদের বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর নিহত ইব্রাহিমের চাচী সৌদি প্রবাসী আবুল বাশারের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগমকে (৩৫) সোমবার আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
মঙ্গলবার বিকালে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে চাচী হোসনেয়ারা তার ঘরে ডেকে নিয়ে শিশু ইব্রাহিমকে গলা টিপে হত্যার পর লাশ ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে রাতে গলায় বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে দেয়।
তিনি আরো জানান, আসামি তাদের নিকট স্বীকার করেন, মৃত্যুর আগে টিন ভাঙ্গা দিয়ে ইব্রাহিম দুইটি আইসক্রিম ক্রয় করেন। হোসনেয়ারা চাইলে ইব্রাহিম একটি আইসক্রিম তাকে খেতে দেন।
ইব্রাহিমের পিতা আবুল কাশেম জানান, তার দুই ছেলে এক মেয়ে। তারা ৪ ভাই সৌদি আরবে থাকেন। তিনি ছেলে নিখোঁজের খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন। তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী এ ঘটনা ঘটাবে তিনি ভাবতেও পারেননি। তিনি এই হত্যার বিচার দাবি করেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব