বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. জাকির হোসেনের বাসায় রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার গৃহকর্মী রাজিয়া খাতুনের (১৩) বাবা নূর ইসলাম কোন অভিযোগ দায়ের করবেন না। এ ঘটনায় তার কোন অভিযোগ নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মেয়ের মৃত দেহ নিতে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি জানান, প্রায় ৭ বছর আগে জাকির হোসেনের বাসায় কাজ করতে দিয়েছিলেন রাজিয়াকে। সেও (জাকির) তাকে খুবই আদর যত্ন করত।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরহেদ হিজলার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পছন্দের বিয়েতে রাজী না হওয়ায় রাগে-ক্ষোভে রাজিয়া আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছেন বাবা নূর ইসলাম। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে রাজিয়া ছিল সবার বড়।
অন্যদিকে রাজিয়ার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্নকারী শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. সাগর রায় জানিয়েছেন, রাজিয়ার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তার শরীরের কোথাও কোন আঘাত কিংবা নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তারপরও লাশের কিছু আলামত ভিসেরা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
অপরদিকে শিশু রাজিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সকালে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন শেরে-ই বাংলা মেডিকেলের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ।
এর আড়ে গত ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে বরিশালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জাকির হোসেনের বাসায় গৃহকর্মী রাজিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। প্রেমের কারণে সে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন এডিএম। নগরীর জর্ডনরোডের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েক বছর ধরে রাজিয়া তার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিল। সম্প্রতি ওই এলাকার আরেক বাসার এক গৃহকর্মী মিলনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে রাজিয়া। এডিএম’র স্ত্রী রাজিয়ার বাবাকে বিষয়টি জানান এবং দুর্ঘটনা এড়াতে রাজিয়াকে ফিরিয়ে দিতে চান। তখন রাজিয়ার বাবা রাজিয়াকে বাকাঝকা করেন। এর পর ভয়ে রাজিয়া আত্মহত্যা করতে পারে বলে দাবি করেন এডিএম জাকির হোসেন।
বিডি প্রতিদিন/১৩ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল