জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বাবা ও বরেণ্য ফুটবলার শামসুল ইসলাম মোল্লা (৭৮) মারা গেছেন। নগরীর সাগরপাড়ায় বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে নেমে তিনি ডুবে যান। পরে দুপুর দুইটার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
স্বজনরা জানান, ১১ টার দিকে তিনি গোসল করতে যান। দুপুর পর্যন্ত তিনি ফিরে না আসায় তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে ওই পুকুরে তার লাশ পাওয়া যায়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের স্টেশন অফিসার ফরহাদ হোসেন বলেন, শামসুল আলম মোল্লা মহল্লার ডা. আবদুল কাইয়ুমের পুকুরে গোসল করতে নেমেছিলেন। এরপর তিনি তলিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে খবর দেন দমকল বাহিনীল ডুবুরি দলকে। এরপর দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গিয়ে পুকুরের তলদেশে অনুসন্ধান শুরু করে। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে লাশটি পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধারের পর সেটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান স্টেশন অফিসার ফরহাদ হোসেন।
শামসুল ইসলাম মোল্লা ছিলেন দেশ বরেণ্য ফুটবলার। তার জন্ম ১৯৪৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তাদের পরিবার রাজশাহী আসে ১৯৪৯ সালে। ফুটবলটা শুরু করেছিলেন স্কুলে। প্রথম ক্লাব ছিল সেন্ট্রাল জেল। তাদের হয়ে খেলেন ১৯৫৮-১৯৬৩ সাল। সে সময় দিনাজপুরের একটা টুর্নামেন্টে তার খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন মোহামেডান ও পাকিস্তান জাতীয় দলের দুই কৃতী ফুটবলার কবীর ও গজনবী। তাদের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েই মোহামেডানে আসেন। মোহামেডানে শুরুতে জায়গা পেতে সমস্যা হলেও কিছুদিনের মধ্যে স্ট্রাইকার হিসেবে নিশ্চিত হয়ে যায় তার নাম। ১৯৬৩, ১৯৬৫, ১৯৬৬ আর ১৯৬৯ সালে লিগ জেতার পাশাপাশি মোহামেডানের হয়ে আগাখান গোল্ড কাপ জিতেছিলেন ১৯৬৪ ও ১৯৬৮ সালে। জহির, বশির, জাকারিয়া পিন্টু, প্রতাপ হাজরা, নুরুন্নবী, কালা গফুর, মুসা, তোরাব আলীদের নিয়ে দুর্দান্ত দলই ছিল মোহামেডান।
১৯৬১ সালে পাকিস্তানি ফুটবল কর্তাদের নজরে পড়েন। এর কিছুদিন পর সুযোগ পান পাকিস্তান যুবদলে। ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলেছেন চীনের বিপক্ষে। পাকিস্তান যুবদলের হয়ে রাশিয়া গিয়েছিলেন ১৯৬৫ সালে। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ফুটবলে ছিলেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন