আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বিএনপির কাছে এখন একটা ইস্যু এসে গেছে, বাকশাল। আর কোনো ইস্যু নেই, এটা নিয়েই তারা ব্যস্ত আছে। কিন্তু এখন বাকশাল প্রতিষ্ঠার কোনো প্রয়োজন নেই। একানব্বই সালে আমরা (আওয়ামী লীগ) বিরোধী দলে থেকেই সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। এজন্য যা যা দরকার করেছি। এখন আমরা কোন কারণে বাকশাল করব?
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের ওর্য়াকার্স পার্টি আয়োজিত এক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা: ধর্মনিরপেক্ষতার সংকট ও সম্ভাবনা শীর্ষক এই গোল টেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ওর্য়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।
এসময় তিনি আরো বলেন, তখন কেন বাকশাল করা হয়েছিল, বাকশালের রাজনৈতিক দর্শনের কথা নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বলেছেন। এখন বাকশাল করার কোনো সম্ভবনা নেই। আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আপনারা ( বিএনপি) গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে আমাদের সাথে আসেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমাদের চাইতে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি বাংলাদেশে কে করে? কোন দল আছে? এমন অনেককে দেখেছি যারা মুখে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পক্ষে অনেক বড় বড় কথা বলে, আবার জামায়াতের সাথেও সম্পর্ক রাখে। এতো অস্থির হওয়ার কিছু নেই। রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া রাজনীতি হয় না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতি করি বামপন্থীরা (সরি) সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আলোচনা করে দিন কাটিয়ে দেয়।
তিনি আরো বলেন, এদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে বিএনপি-জামায়াত। ওদেরকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছি, তাতে ওরা নিস্তেজ হয়েছে কিন্তু নির্মূল হয়নি। সুযোগ পেলে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে নিমূল করতে হলে ওদের নির্মূল করতে হবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, উদার গণতন্ত্র চাইবেন আবার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাইবেন-এটা হতে পারে না। এক সাথে দুইটা হয় না। সুশাসন চাইবেন আবার উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চাইবেন, তা হয় না। দু’টো জিনিষ আপনি একসাথে চাইতে পারেন না। কিছু বিষয়ে আপনাকে কঠোর হতে হবে। যা অর্জন করেছি, তা ধরে রাখতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আমরাই প্রতিষ্ঠা করবো।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হ্যা-না ভোট যারা করেছে, মার্শাল যারা দিয়েছে, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওর্য়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। আলোচনায় অংশ নেন, জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, বাংলাদেশে জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, প্রবীণ সাংবাদিক কলামিষ্ট কামাল লোহানী, সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসনে চৌধুরী মায়া, লেখক মফিদুল হক, অধ্যাপক এম এম আকাশ, ড. এনামুল হক, হিন্দু-বৌদ্ধ -খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা কাজল দেবনাথ, নির্মল ডি রোজারিও, ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মাওলাা জিয়াউল হাসান সহ ১৪ দলীয় জোট নেতারা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
