অবশেষে ক্যাসিনো কারবারি আওয়ামী লীগ নেতা দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে আলোচনায় আসার প্রায় তিন মাস পর সোমবার সকালে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হলেও গ্রেফতার এড়াতে দুই ভাই কক্সবাজারে আত্মগোপন করেছিলেন।
গ্রেফতারের পর সোমবার দুপুরে এনু ও রুপনকে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমতিয়াজ আহমেদ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়, তারা তা আঁচ করতে পেরে সেখান থেকে পালিয়ে কক্সবাজার চলে যান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, নৌযানে অবৈধভাবে মিয়ানমার হয়ে মালয়েশিয়া পালিয়ে যাবেন।
তবে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলে এনু ও রুপন নেপালে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এজন্য তারা ঢাকায় এসে কেরানীগঞ্জে মোস্তফা নামের এক সহযোগীর বাড়িতে অবস্থান করেন। সেখান থেকে বেনামি পাসপোর্ট তৈরি করে ভারত হয়ে নেপাল যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন দুই ভাই। বেনামি পাসপোর্ট ও ভারত হয়ে নেপাল যাওয়ার জন্য মোট ৪০ লাখ টাকা সাথে রেখেছিলেন। তাদের গ্রেফতারের সময় সেই টাকাসহ ১২টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া অভিযানে ক্যাসিনোর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও অর্থ জব্দের পর তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার আইনে যে নয়টি মামলা হয়, সেগুলো তদন্তের ভার সিআইডির কাছে আসে। নয়টির মধ্যে চারটি মামলার এজাহারেই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়ার নাম দেখা যায়। এরপর মামলা তদন্তের ধারাবাহিকতায় আমরা তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তাদের গ্রেফতার করা হলো।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে সূত্রাপুরের বানিয়ানগরে তাদের বাড়িতে র্যাব অভিযান চালিয়ে তিনটি ভল্টে খুঁজে পায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ৭২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। ছয়তলা ওই বাড়িতে অভিযান শেষে নারিন্দার লালমোহন সাহা স্ট্রিটে এনামুলের কর্মচারী আবুল কালাম কালু এবং শরৎগুপ্ত রোডে তার বন্ধু হারুনুর রশীদের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় আরও দুটি ভল্ট থেকে মোট ৪ কোটি টাকা জব্দ করা হয়। এসব টাকা ক্যাসিনোর বলে র্যাবের ধারণা। র্যাব কর্মকর্তারা বলেন, টাকা রাখার যায়গা না পেয়ে এ দুই ভাই সোনা কিনে রাখেন।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব