কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণের লক্ষে শুরু হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল ভিত্তিক সমন্বিত অভিযান (ক্রাশ প্রোগ্রাম) আজ মঙ্গলবার অব্যাহত ছিল। শুক্রবার ব্যতীত আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। এ ক্রাশ প্রোগ্রামে ডিএনসিসির সকল মশক নিধনকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ মশক নিধনের সাথে যুক্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি অঞ্চলে একদিন করে কাজ করবেন।
ডিএনসিসির সকল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও একসাথে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করছেন। অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মশক নিধনকর্মী মশার কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। আজ মঙ্গলবার মিরপুর-১০ অঞ্চলে (অঞ্চল-৪) এ অভিযান সম্পন্ন হয়।
আগামীকাল ১০ মার্চ কারওয়ান বাজার অঞ্চল (অঞ্চল-৫), ১১ মার্চ মহাখালী অঞ্চল (অঞ্চল-৩), ১৩ মার্চ ভাটারা অঞ্চল (অঞ্চল ৯) ও সাতারকুল অঞ্চল (অঞ্চল-১০), ১৪ মার্চ উত্তরা অঞ্চল (অঞ্চল-১), ১৫ মার্চ দক্ষিণখান অঞ্চল (অঞ্চল-৭) ও উত্তর খান অঞ্চল (অঞ্চল-৮) এবং ১৬ মার্চ হরিরামপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-৬) এই অভিযান পরিচালিত হবে। অভিযান সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটায় পাইকপাড়া, দক্ষিণ বিশিল গোদাখালি খাল, পাল পাড়া ঘাট বেড়িবাঁধ, দারুসসালাম ঈদগাহ মাঠে এলাকা পরিদর্শন করেন। বিকাল ৪টায় তিনি কচুক্ষেত ইব্রাহিমপুর খাল এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে মেয়র বলেন, "গতকাল আমি সাগুফতা খালে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছি পয়োনিষ্কাশন লাইন খালের ভিতরে। এখানে একটা চ্যালেঞ্জ আমি দেখেছি। গতকাল সকালে আপনারা দেখেছেন ফগিং করেছি ফুটপাথের নিচে যে ড্রেন আছে সেখানে। কীটতত্ত্ববিদগণ আমাকে বলেছেন ফুটপাতের নিচে ড্রেনে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। শহরের আনাচে কানাচে প্রচুর ডোবা আছে। আমাদের চেষ্টার কোন কমতি নেই। আমরা যে পদ্ধতি এখন অবলম্বন করেছি এটা খুবই কষ্টসাধ্য। ডিএনসিসির অন্য নয়টি অঞ্চলের সকল মশক নিধন কর্মী, সকল যন্ত্রপাতি একটি অঞ্চলে নিয়ে এসেছি ব্যাপকভাবে, সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য। অভিযান শেষে প্রতিদিন রাতে আমরা মিটিং করছি অভিযানের পর্যালোচনা করতে"।
আতিকুল ইসলাম জানান, এ অভিযান শেষ হলে মশক নিধন কর্মীদেরকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গতকাল যেসব এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল সেখানে আজ মশার উপদ্রব কমে এসেছে বলেও তিনি জানান।
অভিযান চলাকালে মশার লার্ভা পাওয়ায় অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম শফিউল আজম ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪টি মামলায় ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে মশার লার্ভা পাওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পারসিয়া সুলতানা প্রিয়াংকা ৫টি মামলায় ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে মশার লার্ভা পাওয়ায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বির আহমেদ ১টি মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এছাড়া ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাসুদ হোসেন ৩টি মামলায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অপর ১টি মামলায় বাড়ির কেয়ার টেকার আমাদের কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করায় তাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২টি পরিত্যক্ত হোল্ডিং মালিক এর তথ্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড অফিস থেকে পাওয়া যাওয়া সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, মতিউর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল