প্রকৃতিতে চলছে এখন বসন্ত ঋতু। এই ঋতুর অন্যতম সুস্বাদু সবজি হচ্ছে সজনে। এটি এখন রংপুরের অনেক স্থানের গাছে গাছে দোল খাচ্ছে। রংপুর অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে এটি চাষ হলে অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে কৃষিবিদরা মনে করছেন।
রংপুর নগরীর সাতমাথা, মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ, রানীপুকুর এলাকায় অনেকে সজনে চাষকে বাণিজ্যিকভাবে গ্রহণ করলেও এটি এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিক সবজি হিসেবে জনপ্রিয়তা পায়নি চাষিদের কাছে। কারণ এটি জমিতে বপন করলে এক বছর ওই জমিতে অন্য ফসল আবাদ করা যায় না।
তাই এটি বসতবাড়ি ও রাস্তার পাশেই এর ফলন ভালো হয়। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই সজনে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব বলে অনেকেই মনে করছেন।
পায়রাবন্দের আদর্শ চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি বাণিজ্যিকভাবে সজনের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই সজনে চাষ করেছেন। প্রতি কেজি সজনে এখন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক বছর আগে কৃষি অফিসের উদ্যোগে রংপুরে মিঠাপুকুর, বলদিপুকুর ও রানিপুকুর এলাকায় রাস্তার পাশে সজনে গাছ লাগানো হয়েছে। তবে অযত্ন-অবহেলায় এখন অনেক গাছ মরে গেছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বারোমাসি সজনের জাতে প্রায় সারা বছরই ফলন পাওয়া যায়। তবে বসন্তকাল অর্থাৎ চৈত্র মাসে প্রতিটি গাছেই সজনে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ২-৩ প্রকার সজনে পাওয়া যায়। বসতবাড়ির আঙিনা ও রাস্তার পাশের সজনে গাছ এখন বাহারি শোভা বর্ধনের পাশাপাশি গৃহস্থদের বাড়তি অর্থ এনে দিচ্ছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যান বিশেষজ্ঞ মেছবাহুল ইসলাম বলেন, সজনের পাতা পুষ্টিগুণে ভরা। নিরামিষভোগীরা সজনের পাতা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারেন। পরিমাণের ভিত্তিতে তুলনা করলে একই ওজনের সজনে পাতায় কমলা লেবুর ৭ গুণ ভিটামিন-সি, দুধের ৪ গুণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে, সজনে গাছ ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে।
ওই উদ্যান বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, সজনে রংপুর অঞ্চলে একটি সম্ভাবনাময় সবজি। বনায়নের সময় অন্যান্য গাছের চারা রোপণের সময় সজনে চারা রোপণ করলে এক থেকে দেড় বছরের মাথায় এর ফলন পাওয়া যাবে। সজনের বাকল, শিকড়, ফুল, ফল, পাতা ও বীজ এমনকি এর আঠাতেও ওষুধি গুণ রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই