দিনের বেলায় কেউ ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা, কেউ অটোরিকশাচালক। আর রাতে হয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্য। এ চক্রটি দিনের বেলায় শ্রমিক সেজে মূলত বিভিন্ন বাসাবাড়ি রেকি করে। সুযোগ বুঝে রাতে চুরি করে। এভাবে চার-পাঁচ বছর ধরে চক্রটি চুরি করে আসছে। রাজধানীর আলোচিত ধানমন্ডির চুরির ঘটনায় এ চক্রের চারজনকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। গ্রেফতাররা হলো- নাসির শেখ, মো. ফরহাদ, মো. সেলিম ও মো. আজাদ। তাদের কাছ থেকে চুরিতে ব্যবহৃত দুটি দেশীয় অস্ত্র, চারটি মোবাইল ফোন, দুই সেট পোশাক, ৪ হাজার ৮০০ টাকা ও বিভিন্ন বাসা থেকে চুরি করা গলিত সোনার বারসহ অলঙ্কার জব্দ করা হয়। শুক্রবার রাতে র্যাব-২ রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতাররা গত ৬ ডিসেম্বর রাতে ধানমন্ডির একটি বাসায় চুরির পরিকল্পনা করে। ভাড়া করা মেসে চোর চক্রের পাঁচ সদস্য পরিকল্পনা করতে একত্রিত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ ডিসেম্বর রাতে ধানমন্ডির ওই ফ্ল্যাটের জানালার গ্রিল কেটে ভিতরে ঢুকে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা চুরি করে।
তাদের এ চুরির দৃশ্য বিদেশে অবস্থানরত বাড়ির মালিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে পান। পরবর্তী সময়ে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বসহ প্রচারিত হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির  কথা স্বীকার করেছে। এ চক্রের সদস্য সংখ্যা ছয়-সাতজন। ফাঁকা বাড়িই তাদের লক্ষ্য থাকে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ধানমন্ডির ওই বাসায় চুরি করার পরদিন তারা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আজাদের স্বর্ণের দোকানে যায়। এরপর ৫০ হাজার টাকায় সেগুলো বিক্রি করে। পরবর্তী সময়ে সেই টাকা নাসির, ফরহাদ ও সেলিমসহ দলের আরও দুজন নিজেদের মধ্যে ভাগবণ্টন করে নেয়। আজাদ স্বর্ণালঙ্কার কেনার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো গলিয়ে ফেলে। নাসির পেশায় স্যানিটারি মিস্ত্রি। সে পাঁচ-ছয় বছর ধরে পেশার আড়ালে চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত।
ধানমন্ডির বাসায় চুরির ঘটনায় গ্রিল কাটার পর প্রথম সে বাসায় ঢোকে। তার নামে বিভিন্ন থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। ফরহাদ পেশায় ফল বিক্রেতা। ধানমন্ডির এ চুরির ঘটনায় তাকে বাসার ভিতর টর্চ লাইট দিয়ে আলো ফেলতে ও গ্রিল কাটতে দেখা যায়। এর আগে ২০১৭ সালে তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেলিম পেশায় সবজি বিক্রেতা। চুরির ঘটনায় সে সানশেডে থেকে গ্রিল কাটতে সহায়তা করে। আজাদের বছিলায় স্বর্ণের দোকান রয়েছে। সে চোরাই স্বর্ণালঙ্কার কেনাবেচায় জড়িত। এর আগেও সে চুরি ও ছিনতাইয়ের স্বর্ণালঙ্কার কম দামে কিনে বেশি লাভে বিক্রি করেছে। গ্রেফতাররা ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর এলাকাকেন্দ্রিক একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল
 
                         
                                     
                                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        