রংপুরে চলতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশায় মানুষের মতোই কাবু হয়ে পড়ছে রংপুর চিড়িয়াখানার ৩২ প্রজাতির ২৫৪টি প্রাণী। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, শীতকাতর প্রাণীগুলোকে বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চিড়িয়াখানায় গিয়ে শীতে মানুষের মতোই কাহিল হতে দেখা গেছে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের। শীতের তাণ্ডবে প্রাণীগুলো এক প্রকার নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। প্রতিটি খাঁচার ভেতরে পশুপাখি গুটিসুটি মেরে বসে আছে। খাঁচার ভেতরে দেখা গেছে শীতে কাতর সিংহ-সিংহীকে। অন্যদিকে বানরসহ অন্যান্য প্রাণী খাঁচার কোনায় গুটিসুটি মেরে বসে থাকতে দেখা গেছে। হরিণ, ঘোড়া, ময়ূর, বাঘ, সিংহ, বানরসহ সব পশুপাখি গুটিয়ে বসে আছে। এসব প্রাণী একটু উষ্ণতার জন্য দর্শনার্থী মানুষের দিকে হা করে তাকিয়ে রয়েছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর চিড়িয়াখানায় ৩২ প্রজাতির প্রায় ২২৪ প্রাণী ও পশুপাখি রয়েছে। চিড়িয়াখানায় যে সব প্রাণী রয়েছে সেগুলো হলো-সিংহ, জলহস্তী ৩টি, ময়ূর ৮টি, হরিণ ৫৯টি, অজগর সাপ দুটি, ইমু ৩টি, উটপাখি একটি, বানর ৯টি, কেশওয়ারি একটি, গাধা ৩টি, ঘোড়া ২টি, ভাল্লুক একটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি উল্লেখযোগ্য।দেশে দুটি সরকারি চিড়িয়াখানের মধ্যে রংপুর একটি। এ সব প্রাণীগুলোর মধ্যে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছে উটপাখি, ভাল্লুক, হনুমন ও কেশওয়ারি। এর সঙ্গীর অভাবে বংশ বিস্তার করতে পারছে না। দীর্ঘদিন থেকে কর্তৃপক্ষ এই প্রাণীগুলোর সঙ্গী আনার জন্য ঢাকায় আবেদন করলেও তা গ্রহণ হয়নি। এছাড়া চিড়িয়াখানার একমাত্র বাঘিনী শাওন গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে। বাঘিনীটিও দীর্ঘদিন সঙ্গীহীন অবস্থায় ছিল।
প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ রংপুর নগরীর হনুমানতলা এলাকার ৮৯ সালে গড়ে তোলেন রংপুর চিড়িয়াখানটি। এটি দর্শনার্থীদের জন্য ৯২ সালে খুলে দেয়া হয়। প্রায় ২১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই চিড়িয়াখানা। প্রতিদিন এখানে কয়েক হাজার দর্শনাথীর সমাগম হয়।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. আম্বর আলী তালুকদার জানান, শীতে প্রাণীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব সময়ের জন্য চিকিৎসা সেবা, অসুস্থ হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। যে সব প্রাণী একেবারে শীত সহ্য করতে পারে না, তাদের প্রতিটি খাঁচার চারদিকে চট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ ব্যবস্থায় খড় দেয়া হয়েছে, যাতে প্রাণীর শরীর গরম থাকে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই