শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের কোন বাস যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে গেলেই ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে গত তিনদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে আরও বিস্তারিত তুলে ধরেন মালিক গ্রুপ ও শ্রমিক নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, নিজেকে যাত্রাবাড়ী থানার যুবদল নেতা দাবি করে ফাহিম নামের এক ব্যক্তি পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবিতে গাড়ি ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারপিট করেছে। ইতিমধ্যে তথাকথিত এই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে একাধিক অভিযোগও করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শরীয়তপুরের বাসযাত্রীরা যাত্রাবাড়ী যেতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শরীয়তপুর জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চকিদার বলেন, ‘যাত্রাবাড়ীতে যুবদলের কথিত নেতা ফাহিম শরীয়তপুরের সকল বাস থেকে চাঁদা চেয়েছে। এককালীন ৫ কোটি, নয়তো প্রতিমাসে ১০ লাখ। তিনদিন ধরে কোন বাস যাত্রাবাড়ী যেতে পারছে না, সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে আসতেও পারছে না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শরীয়তপুরের মানুষেরা।
এব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বাস শ্রমিক বলেন, যাত্রাবাড়ীতে আমাদের শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের বাসিগাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কথিত নেতা ফাহিমের লোকজন হামলা করছে। এভাবে তিনদিনে আমাদের ২০-২৫টি বাস ভাঙচুর করেছে তারা। এতে বেশ কয়েক বাসচালক ও শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এ নিয়ে শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফারুক তালুকদার বলেন, আমাদের বাস যাত্রাবাড়ী রাখা হতো, ওখানে ফাহিম নামের এক সাবেক যুবদল নেতা ৫ কোটি টাকার উপরে চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা না দেওয়ার কারণে আমাদের বাস রাখতে বাধা প্রদান করে, ভাঙচুর চালায় ও হুমকি দেয়। তাই আমরা বাস যাত্রাবাড়ী যেতে পারছি না। এর ফলে শরীয়তপুর জেলার হাজার হাজার যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি সমাধান হলে আমরা যাত্রাবাড়ী থেকে আবার বাস চালু করতে পারবো।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত এই তথাকথিত যুবদল নেতা ফাহিমের বিরুদ্ধে শুধু চাঁদাবাজি নয় মাদক ব্যবসারও অভিযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তার মাদক ব্যবসার খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেসব খবর থেকে জানা যায়, ফাহিমের ছত্রছায়ায় নতুনভাবে মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে উঠেছে যাত্রাবাড়ী। অত্র থানার যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা সংলগ্ন বাজারের পেছনের এলাকা, মধ্যপাড়া কাঁচা বাজারের মুরগীর গলি, চন্দনকোঠা, টানপাড়া, বিদ্যুৎ গলি এলাকায় মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। এমনকি নিকটবর্তী গেন্ডারিয়া, ধুপখোলা, জুরাইন থেকেও কিশোর-তরুণরা মাদকের খোঁজে এসব এলাকায় ভিড় জমাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট প্রকাশিত সংবাদ থেকে আরও জানা যায়, এসব মাদকের নিয়ন্ত্রণ করছেন এই ‘মুশফিকুর রহমান ফাহিম’ নামের ব্যক্তি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেকে যুবদলের নেতা দাবি করে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি ফাহিম শুরু করেন চাঁদাবাজি ও ফুটপাত দখল বাণিজ্য। যাত্রাবাড়ী থানার সম্মুখে লেগুনা স্ট্যান্ড ও গাড়ি পার্কিংয়ের চাঁদাবাজি, দক্ষিণ অঞ্চলগামী সকল পরিবহনের কাউন্টার, থানার সম্মুখে লেগুনা স্ট্যান্ড ও গাড়ি পার্কিং থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ের ঘটনা ঘটছে এখানে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ