শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাস্টমস কর্মকর্তার বাসায় ঘুষ ভাগাভাগি, অস্ত্রসহ আটক ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী মহানগরীতে এক কাস্টমস কর্মকর্তার বাসায় ঘুষের টাকা ও ডলার লেনদেনের সময় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় বাড়িটি থেকে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ঘুষের ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৭ হাজার ডলার এবং গুলিসহ একটি পিস্তল। বুধবার গভীর রাতে নগরীর উপশহর এলাকার ১৭১ নম্বর বাড়িতে এ অভিযান চালায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। বাড়িটি কাস্টমস গোয়েন্দার সুপারিনটেনডেন্ট আইয়ুব আলীর। তিনি রাজশাহী বিভাগীয় কাস্টমস সদর দফতরে কর্মরত। আটক ৭ জন হলেনÑ আবু সাইদ নয়ন, আহসানুল কবীর মিঠু, মনিরুল ইসলম জুয়েল, বায়োজিদ হোসেন, আবদুল মান্নান, আবুল হাসান রুবেল ও আবদুল মালেক। তবে অভিযানের সময় কাস্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। আটক সাতজনের মধ্যে ছয়জনই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি করেন। কয়েক দিন ধরেই তাদের নজরদারিতে রেখেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মধ্যে নয়নের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। মিঠুর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর গ্রামে। তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আবদুর রশিদের জামাই। আর বায়োজিদ হোসেনের বাড়ি সোনামসজিদেই। আবদুল মান্নানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজারামপুরে এবং আবুল হাসান রুবেল সোনামসজিদ স্থলবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত কাস্টমসের সহকারী কমিশনার বেলাল হোসেনের পিয়ন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস কর্মকর্তা আইয়ুব আলীর উপশহরের বাড়িতে প্রায় দিনই ঘুষের টাকার লেনদেন হতো। বসত মদের আসরও। আইয়ুব আলী ঘুষের সেই টাকা অন্য কাস্টমসের কর্মকর্তাদের মাঝেও বণ্টন করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই অভিযানে যায় রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশ। সূত্র জানায়, বুধবার মনিরুল ইসলাম জুয়েলের লাইসেন্সে দুই ট্রাক ভারতীয় প্রসাধন সামগ্রী স্থলবন্দর হয়ে দেশে আসে। এতে মোট ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করে ট্রাক দুটি বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। এরপর ব্যবসায়ীরা ঘুষের টাকা দিতে আসেন আইয়ুব আলীকে। তখনই অভিযান চালিয়ে ঘুষের টাকা ও ডলার এবং অস্ত্রসহ তাদের আটক করা হয়। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, জব্দ করা অস্ত্র, টাকা ও ডলার বোয়ালিয়া থানায় রাখা হয়েছে। অস্ত্রটি আবদুল মালেকের লাইসেন্স করা বলে দাবি করা হয়েছে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। আর আটক সাতজনকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে। বাড়ির মালিককে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর