বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তিন বছরে রাজস্ব ঘাটতি ৪ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা

বেনাপোল বন্দর

বকুল মাহবুব, বেনাপোল (যশোর)

নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে বেনাপোল কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম। শুল্ক ফাঁকি, বন্দর থেকে পণ্য চুরি, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা সর্বদা তাড়া করছেন চক্রটিকে। আটক হচ্ছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ পণ্য। ইতিমধ্যে ভায়াগ্রাসহ একাধিক আমদানি-নিষিদ্ধ পণ্য আটক করেছেন কাস্টমস এবং শুল্ক ও গোয়েন্দার সদস্যরা। অভিযোগ রয়েছে, বেনাপোল কাস্টমস ও বন্দরের কিছু কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বন্দর থেকে শুল্ক ফাঁকি ও পণ্য চুরির ঘটনা ঘটে থাকে। খোদ বেনাপোল স্থলবন্দরের সিবিএ নেতাদের নামে রয়েছে বন্দর থেকে পণ্য চুরির মামলা। এ কারণে গত তিন অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি বেনাপোল কাস্টমস হাউস। রাজস্ব আদায়ে মারাত্মক ধস নেমেছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ বন্দরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা রাজস্ব কম আয় হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৭৬ কোটি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজর ৩৪৬ কোটি টাকা ও সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ও অনিয়ম রুখতে পারলে আবারও তারা এ বন্দরে ফিরবেন। গতি ফিরবে রাজস্ব আয়ে। আর বন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দর উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসে। কিন্তু এ বন্দর থেকে এত টাকা সরকারের আয় হলেও প্রয়োজন অনুযায়ী বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। বারবার বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন আজও হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরে চলে যাওয়ায় রাজস্ব আয় কমেছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক আবদুল জলিল বলেন, ইতিমধ্যে বন্দরে বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরা, নতুন জায়গা অধিগ্রহণ, পণ্যাগার নির্মাণসহ বেশ কিছু পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। এসব কাজ শেষ হলে অনিয়ম বন্ধসহ বাণিজ্যে গতি ফিরবে বলে তিনি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর