রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

সিলেটে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যাচ্ছেন অনেক রোগী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বেলা আড়াইটা। সিলেটের কভিড ডেডিকেটেড শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের সামনে এসে থামে একটি অ্যাম্বুলেন্স। রোগী নামানোর আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন সিট খালি নেই। অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর বাবার শরীরে হাত বুলিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন ছেলে। একটাই আকুতি ‘বাবার জন্য একটি আইসিইউ বেড। আইসিইউ না মিললে অন্তত একটি সাধারণ শয্যা’। কিন্তু ১০০ শয্যার শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল পূর্ণ রোগীতে। তাই বাবার নিথর দেহের পাশে বসে চিৎকার করা ছেলের মতো অসহায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। শেষ চেষ্টা হিসেবে ওই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা করে জানালেন অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেছেন তিনি। হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে আসা মুহিবুর রহমানকে নিয়ে এভাবেই তার স্বজনরা ঘুরেছেন হাসপাতালে হাসপাতালে। কিন্তু কোথাও পাননি আইসিইউ বা সাধারণ একটি সিট। ফলে অ্যাম্বুলেন্সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হয়েছে তাকে। গেল তিন-চার দিন থেকে সিলেটে এরকম ঘটনা ঘটছে অহরহ। হাসপাতালে সিট না পেয়ে কেউ মারা যাচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্সে। আবার চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে কেউ ফিরছেন বাসায়। জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই সিট খালি নেই। ফলে রোগীদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কোনো রোগী সুস্থ হলে বা মারা গেলে তবেই ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন নতুন রোগী। ভর্তি হতে না পেরে কেউ কেউ হাসপাতালগুলোতে নাম নিবন্ধন করে যাচ্ছেন। কোনো সিট খালি হলে ফোনে জানানোর জন্য অনুরোধ করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, ওসমানী হাসপাতালে কভিড ও কভিড উপসর্গের রোগীদের চিকিৎসার জন্য তিনটি ওয়ার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ তিন ওয়ার্ডে ১৬৫টি শয্যা রয়েছে। এ ছাড়া আটটি শয্যাযুক্ত আইসিইউর একটি ইউনিট কভিড চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত তিন-চার দিন ধরে কভিড ওয়ার্ডের সব সিট রোগীতে পূর্ণ। নির্ধারিত ওয়ার্ড ছাড়াও অন্যান্য ওয়ার্ডেও কভিড রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. চয়ন রায় জানান, হাসপাতালে কোনো সিট খালি নেই।

কেউ সুস্থ হলে বা মারা গেলে তবেই নতুন রোগী ভর্তি করার সুযোগ মিলছে। সিলেট বেসরকারি হাসপাতাল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. নাসিম আহমদ জানান, সিলেটের সবকটি বেসরকারি হাসপাতাল মিলে কভিড চিকিৎসার জন্য প্রায় সাড়ে ৪০০ সাধারণ শয্যা ও আইসিইউর ৯৭টি শয্যা রয়েছে। বর্তমানে কোথাও সিট খালি নেই।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর