বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

খাল-ড্রেন যখন মৃত্যুকূপ

চট্টগ্রামে এবার শিশু নিখোঁজ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের উন্মুক্ত খাল যেন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। সব শেষ সোমবার উন্মুক্ত খালে পড়ে নিখোঁজ হয় কামাল (১০) নামে এক শিশু। নগরের ষোলশহর এলাকার চশমা খালে কিছু খুঁজতে গিয়ে পানির স্রোতের নিখোঁজ হয় শিশুটি। গতকাল সন্ধ্যায় চসিক মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।   চট্টগ্রাম নগরের উন্মুক্ত খাল ও নালাগুলো এখন ক্রমেই মৃত্যুকূপে পরিণত হচ্ছে। বার বার ঘটছে মৃত্যু ও নিখোঁজের ঘটনা। খাল-নালার কাছে হার মানতে হচ্ছে মানুষকে।  জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে পা পিছলে নালায় পড়ে মুহূর্তেই পানির স্রোতে তলিয়ে যান ব্যবসায়ী সালেহ আহমদ (৫০)। প্রায় সাড়ে তিন মাস পার হলেও মিলেনি ওই ব্যবসায়ীর খোঁজ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ের পূর্বে উন্মুক্ত নালায় পড়ে প্রাণ হারান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া। গত ৩০ জুন নগরের মেয়র গলির চশমা খালে পড়ে মারা যান অটোরিকশার চালক সুলতান (৩৫) ও যাত্রী খাদিজা বেগম (৬৫)। ২০১৭ সালের ২ জুলাই রাতে নগরের এম এম আলী রোডের নালায় পড়ে মারা যান সরকারি কর্মকর্তা শলীব্রত বড়ুয়া। গত ২৯ আগস্ট চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ৭ম সাধারণ সভায়ও নগরের খাল-নালা-ড্রেন সংস্কার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। নিখোঁজ কামালের বাবার নাম মো. কাউসার। মা মারা গেছেন। চার ভাই-বোনের মধ্যে কামাল সবার ছোট। তাদের ঘর-বাড়ি না থাকায় বাবার সঙ্গে ষোলশহর স্টেশনের ফুটপাতে থাকত এবং পত্রিকা বিক্রি করত।   জানা যায়, সোমবার বিকাল ৪টায় রাকিব ও কামাল নামের দুই শিশু শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতে চান্দগাঁও ভূমি সার্কেল অফিসের পাশের চশমা খালে কিছু খুঁজতে নামলে পানির স্রোতে তলিয়ে যায়। তখন রাকিব উঠে আসতে পারলেও কামাল উঠতে পারেনি।  নিখোঁজ শিশু কামালের বাবা কাউসার বলেন, সোমবার বিকালে কামালের বন্ধু রাকিবকে নিয়ে খেলতে বের হয়। পরে শুনি সে ড্রেনে পড়ে পানিতে ভেসে গেছে। তবে কাউকে কিছু বলিনি। অনেক খোঁজ করেও পাইনি। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। আমার ছেলেকে হয়ত আর জীবিত পাব না। অন্তত ছেলের লাশটা দেখতে চাই। চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্লাস্টিকের বোতল খুঁজতে নেমে নিখোঁজ হয় শিশু কামাল। এ ব্যাপারে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শিশুটি সোমবার বিকালে ড্রেনে পড়ে যায়। খবর পেয়ে তিনটি ইউনিট উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ডুবুরি দলও কাজ করছে। তবে ময়লার জন্য কাজ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর