বিচারকের স্বাক্ষর, সিল, স্মারক নম্বর জালিয়াতি করে সমাজের নামি-দামি ব্যক্তিদের নামে ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠিয়ে হয়রানি করছে একটি শক্তিশালী চক্র। নকল সিলমোহর এবং সরকারি কর্মকর্তার সই জাল করে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠানোর অভিযোগে গত ৭ ডিসেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলা দায়ের করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কাজী মো. আবু কাইয়ুম। আসামিরা হলেন- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুল করিম চৌধুরী ওরফে স্বপন চৌধুরী। অপর আসামি কায়েছুল ইসলাম।
তিনি স্বপন চৌধুরীর অফিসের কর্মকর্তা। আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে যায়, ব্যবসায়িক কারণে স্বপন চৌধুরীর কাছে টাকা পান আবু কাইয়ুম। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কাইয়ুম পৃথক দুটি মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাইয়ুমের বিরুদ্ধেও বনানী থানায় একটি মামলা করেন স্বপনের অফিসের কর্মকর্তা কায়েছুল। এটি তদন্ত করে পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আসামিরা কাইয়ুমের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা তৈরি করে। পরে আসামিরা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ও নকল সিলমোহর তৈরি এবং সরকারি কর্মকর্তার স্বাক্ষর সংযোজন করে সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠিয়েছেন। এর ভিত্তিতে পুলিশ কাইয়ুমের এলাকায় যায়। পরে কাইয়ুম ঢাকার আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার নামে কোনো মামলা নেই। এ ঘটনায় বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৩/২৫/২৯/৩৩ এবং ৩৫ ধারায় মামলা করেন।প্রসঙ্গত, ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ঠেকাতে গত বছরের অক্টোবরে নাগরিকদের হয়রানি কমাতে ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা রোধে সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছিল হাই কোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।