শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
আপডেটের নামে প্রতারণা

ফোন নম্বর ক্লোনে বিকাশের সাবেক কর্মীরা, গ্রেফতার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিকাশের সাবেক কর্মী মিল্টনের সহযোগিতায় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটির ডিএসওদের ফোন নম্বর ক্লোন করত একটি চক্র। এতে সহযোগিতা করতেন বিকাশের আরেক সাবেক কর্মী রিপন মিয়া। ক্লোনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার বিকাশ এজেন্টদের ফোন দিয়ে নিজেদের বিকাশ হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন তারা। পরে বিকাশ এজেন্ট নম্বর আপডেটের কথা বলে ওটিপি নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এজেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিত চক্রটি। এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- চক্রের হোতা মাহবুব কাজী (২১), তিন সহযোগী বিকাশের চাকরিচ্যুত সাবেক ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার (ডিএসও) শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টন (২৫), রিপন মিয়া (২৪) ও ইউছুফ মিয়া (১৮)। জামালপুর থেকে বুধবার মিল্টন ও রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে ইউছুফ ও ফরিদপুরের মালীগ্রাম থেকে মাহবুব কাজীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের থেকে ৯টি মোবাইল ফোন ও ৫৭টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়। রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) রেজাউল মাসুদ। তিনি বলেন, একজন বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে অভিযোগ আসে- ডিএসওর নম্বর থেকে তার কাছে ফোন করে বলেছে, বিকাশ হেড অফিস থেকে তাকে কল করা হবে। তিনি যেন তাদের চাওয়া তথ্য দিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি তাকে ফোন দিয়ে বলেন তিনি বিকাশের হেড অফিস থেকে বলছেন। ওই ব্যক্তি তার বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্টটি আপডেটের কথা বলে কৌশলে ওটিপি কোড সংগ্রহ করেন। পরে বিকাশ এজেন্ট নম্বর থেকে ১ লাখ ৭০০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় চক্রটি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- সাইবার পুলিশ সেন্টারে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মাহবুব কাজী একজন পেশাদার বিকাশ প্রতারক। বিকাশে প্রতারণার উদ্দেশ্যে তিনি একদিন শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টনকে ফোন করলে কথায় কথায় তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। পরে মাহবুব কাজীর চাহিদা মোতাবেক মিল্টন তার ডিস্ট্রিবিউটর হাউসের আওতাধীন বিকাশ এজেন্ট নম্বরগুলো মাহবুব কাজীকে সরবরাহ করেন।

বিনিময়ে তিনি মাহবুবের কাছ থেকে কমিশন পেতেন। এরপর মিল্টনের মাধ্যমে বিকাশের আরেক চাকরিচ্যুত ডিএসও রিপন মিয়াও এ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। মাহবুব কাজীর বক্তব্য ও তার থেকে জব্দ মোবাইল ফোনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি এ কাজে খুবই পারদর্শী। অভিযোগকারী ছাড়াও অনেক বিকাশ এজেন্ট ও বিকাশ পারসোনাল নম্বর থেকে এ চক্র গত তিন মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা পেইড ভারসন ক্লোনিং অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশের ডিএসওদের নম্বর ক্লোন করে এজেন্টদের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করতেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর