শিরোনাম
রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মানবাধিকারকর্মী পরিচয়ে ছিনতাই গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই করে আসছেন নুরুল আফছার। দৈনিক ভোরের চেতনার সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দিলেও বাস্তবে তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী। রাজধানীতে তিনি একটি ছিনতাই চক্রও পরিচালনা করতেন। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সড়কে নিরাপদে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ছিনতাই ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ির সামনে পত্রিকার স্টিকার ব্যবহার করতেন। আফছারসহ এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক। গতকাল রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। গত ৩০ নভেম্বর একই কায়দায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার খেজুরবাগান এলাকা থেকে এক ভুক্তভোগীকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলেন। পরে তাদের মারধর ও বিদেশি মুদ্রাসহ কয়েক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন আফছার চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায়ই তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত এবং গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মূল হোতা নুরুল আফছার ও তার দুই সহযোগী আফজাল হোসেন এবং মো. মনিরুজ্জামান। আজিমুল হক বলেন, ৩০ নভেম্বর ভোরে বিমানবন্দরে যাওয়ার উদ্দেশে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকার সংসদ সদস্যদের বাসভবনের ৩ নম্বর ভবনের বাসিন্দা অলিউর রহমান তুষার খেজুরবাগান ক্রসিং থেকে  একটি প্রাইভেট কারে ওঠেন। এ সময় প্রাইভেট কারে চালকসহ চারজন যাত্রী ছিলেন। প্রাইভেট কারটি একটু সামনে গিয়ে সংসদ ভবনের ৬ নম্বর গেটে (মণিপুরিপাড়ার বিপরীতে) যাওয়া মাত্রই গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা তুষারের চোখে কালো চশমা দিয়ে হাত বেঁধে ফেলেন। এরপর একটি লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পরে ভুক্তভোগীর পকেটে থাকা ৫ হাজার ১০০ কাতারের মুদ্রা, যা বাংলাদেশি প্রায় দেড় লাখ টাকা, নগদ টাকা ও ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ভুক্তভোগীকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার থানার বলিয়ারপুর যমুনা ন্যাশনাল পার্কের সামনে ফেলে দেন। ৬ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী তুষার বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও আরিচা মহাসড়কের প্রায় আড়াইশ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে নান্দনিক হাউজিং নামে একটি আবাসিক এলাকায় গাড়িটি পাওয়া যায়। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে গাড়িটি জব্দ ও ছিনতাইয়ে জড়িত নুরুল আফছার ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা তুষারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ ও ১৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া প্রাইভেট কারের ড্যাশবোর্ডের সামনে দৈনিক ভোরের চেতনার একটি পত্রিকা এবং সাদা কাগজে সাংবাদিক লেখা লেমেনেটিং করা একটি স্টিকার, ভিকটিমকে মারধর করার কাজে ব্যবহৃত লাঠি, কালো চশমা, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দেওয়া আইডি কার্ডসহ অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। আফছার নিজেকে দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার একজন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। মূলত ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে নিরাপদে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী পরিচয়ের আইডি কার্ড, স্টিকার ইত্যাদি ব্যবহার করতেন। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় খুন, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাইসহ সাতটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর