মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
জামিনের জন্য অসুস্থতার নাটক

জেলে বসেই চাঁদাবাজি করছে চনপাড়া বস্তির শীর্ষ সন্ত্রাসী বজলু

নিজস্ব প্রতিবেদক

জেলে বসেই চাঁদাবাজি করছে চনপাড়া বস্তির শীর্ষ সন্ত্রাসী বজলু

নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া বস্তির ডন বজলুর রহমান বজলু অসুস্থতার নাটক করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে বসেই মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে শুরু করে স্ত্রী সঙ্গ আর পছন্দের খাবার দাবার সবই পাচ্ছেন এ কুখ্যাত সন্ত্রাসী। বস্তিতে মাদকের বখরা, পরিবহন, ছিনতাই আর প্লট ব্যবসার ভাগসহ প্রতি মাসে এখনো বস্তিতে পানির বিল বাবদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা উঠছে তার নামে। সেখানে মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহারের কারণে যখন তখন যার তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জামিন তদবিরসহ চাঁদাবাজি করার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। জানা যায়, চনপাড়া বস্তির কুখ্যাত সন্ত্রাসী বজলুর রহমান বজলু এক সময় ছিঁচকে পকেটমার ছিলেন। ২০০৮ সালের পর স্থানীয় এমপির সঙ্গে সখ্য গড়ে হয়ে উঠেন বেপরোয়া। অন্তত এক ডজন হত্যা মামলাসহ তার নামে বিভিন্ন সময় অর্ধ শতাধিক মামলা হয়। এসব মামলায় একাধিকবার গ্রেফতার হলেও প্রভাবশালীদের কলকাঠিতে অল্প সময়ে জামিনে বের হয়ে আসেন এ সন্ত্রাসী।

সর্বশেষ গত বছরের ১৯ নভেম্বর আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে বজলুকে আটক করে র‌্যাব। সে সময় তার বিরুদ্ধে র‌্যাবের ওপর হামলাসহ কয়েকটি মামলা ছিল। গ্রেফতারের সময় বজলুর কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, ২২০ গ্রাম হেরোইন, ২৫ হাজার ভারতীয় রুপি ও ৭৫ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করে র‌্যাব। র‌্যাবের দায়ের করা চারটি পৃথক মামলায় তিনি এতদিন জেলহাজতে থাকলেও জামিন লাভের কৌশল হিসেবে বর্তমানে অসুস্থতার অভিনয় করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চারতলার ২৬ নম্বর বেডে রয়েছেন সন্ত্রাসী বজলু রহমান। সেখানে তার প্রতিক্ষণের সঙ্গী হিসেবে থাকছেন স্ত্রী সেলিনা। সেখানে তিনি ০১৭১১৩৪৯৫৯২ নম্বর ব্যবহার করে জামিন তদবির করাচ্ছেন। সূত্র মতে, বিশাল ও অত্যন্ত ঘিঞ্জি এবং ঘনবসতিপূর্ণ এই চনপাড়া বস্তিটি ৯টি এলাকায় বিভক্ত। এই এলাকার শীর্ষ পাঁট-ছয়টি মাদক কারবারির প্রধান সমন্বয়ক ও গডফাদার ছিলেন বজলুর রহমান বজলু। বস্তি এলাকার মাদকের প্রায় ২০০টি স্পট থেকে কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বজলু এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি জেলে থাকায় তার দুই ভাই মিরজু ও কাশেম সে ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। তার ম্যানেজার মামুন প্রতি মাসে সাড়ে ৭ লাখ টাকা আদায় করছে বস্তির মানুষের কাছ থেকে। হাসপাতাল থেকে তিনি নিজের মোবাইল নম্বরে মন্ত্রী থেকে শুরু করে আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজি আর অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যও সামলাচ্ছেন। ইতোমধ্যে বস্তিতে তার জামিনের গুঞ্জনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তিনি সত্যিকার অসুস্থ কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন চনপাড়ার সাধারণ মানুষ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর