বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত ৩৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এতে নতুন ও জনবান্ধব বরিশাল নগরী বিনির্মাণ, হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়নের অঙ্গীকার করেছেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীরা সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা ও প্রশাসনের অপতৎপরতার অভিযোগ করেছেন। খোকন সেরনিয়াবাত গতকাল নগরীর বগুড়া রোডের ক্রাউন কনভেনশন হলে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। এতে অগ্রাধীকার দেওয়া হয়েছে, জনবান্ধব নগরী বিনির্মাণ, অযৌক্তিক হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্মূল্যায়ন ও কর ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনায়ন, ট্রেড লাইসেন্স সহজীকরণকে। এ ছাড়া অনলাইন সেবা চালু, বাড়ির প্ল্যান অনুমোদন সহজীকরণ ও ভীতিমুক্ত, খাল খননে বিশেষ উদ্যোগ, বর্ধিত এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণ, বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, ‘জনতার মখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়, সিটি করপোরেশন দুর্নীতিমুক্ত, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত, অসাম্প্রদায়িক নগরী প্রতিষ্ঠা, তরুণদের জন্য আইটি নগরী প্রতিষ্ঠাসহ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে তিনি গুরুত্ব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। দায়িত্ব পেলে বিগত মেয়রদের মতো উন্নয়ন কাজের পার্সেন্টেজ আদায় করবেন কিনা এবং সিটি করপোরেশনে প্রকাশ্য ঘুষ-দুর্নীতি রোধে কি পদক্ষেপ নেবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতিমুক্ত। আমি চাইব না সিটি করপোরেশনে দুর্নীতি হোক। দুর্নীতি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। নৌকা প্রার্থীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আফজালুল করিম, কেন্দ্রীয় নেতা বলরাম পোদ্দার, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইছাহাক আলী খান পান্না, মহানগর যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা মো. মোহসীন, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হক নীলু এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস গতকাল ২২, ২৩, ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নবগ্রাম রোডে গণসংযোগ করেন। বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিংয়ের কঠোর সমালোচনা করেন তাপস। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের বিশেষ দুটি সংস্থা নৌকা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে যে কোনোভাবে বিজয়ী করার ছক করেছে। মানুষ সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কিত। ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম নগরীর বাকলার মোড় এলাকায় গণসংযোগ করেন। ফয়জুল করীম সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিময় নিরাপদ নগরী বিনির্মাণে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন তিনি। জনগণ ভোট দিতে পারলে হাতপাখা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী বলছে গত সাড়ে ৪ বছরে উন্নয়ন হয়নি। উনিও (নৌকা প্রার্থী) তো আওয়ামী লীগের প্রার্থী। উনি যে উন্নয়ন করবেন তার গ্যারান্টি কী? বিএনপির প্রয়াত মেয়রের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপণ নগরীর পলাশপুরে গণসংযোগ করেন। সাংবাদিককের রূপণ বলেন, সব প্রার্থীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচিত হলে রোদ-বৃষ্টি-ঝড় সব সময় জনগণের পাশে থেকে সেবা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু স্টেডিয়াম কলোনি ও আলোকান্দা এলাকায় এবং দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদার ও মো. আসাদুজ্জামান বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়েছেন। বরিশাল সিটি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ১২ জুন।