মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার ৪৯তম বার্ষিকীতে গতকাল এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বিকাল সাড়ে ৫টায় উদীচী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি হাবিবুল আলম, শিবানী ভট্টাচার্য, প্রবীর সরদার, নিবাস দে, জামসেদ আনোয়ার তপন, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, কোষাধ্যক্ষ বিমল মজুমদার, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আরিফ নূর, শিখা সেনগুপ্তা, কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য নাজমুল আজাদ ও আজমীর তারেক চৌধুরী এবং নাজমুল হক বাবু, সৈয়দা রত্না, বিপ্লব আল মামুন প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
সভার শুরুতে ১৫ আগস্ট নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। শোক সংগীত পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। পরে আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি পর্বেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ দেশের মানুষকে স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা দেওয়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা ছিল তাঁর। জেল-জুলুম-অত্যাচার-নিপীড়ন উপেক্ষা করেই এ লড়াইয়ে শামিল হন তিনি। তবে যে মৌলবাদমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী, দুর্নীতিমুক্ত সুখী সুন্দর দেশ গঠনের স্বপ্ন তিনিসহ লাখো বীর মুক্তিযোদ্ধা দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি। এসব মুনাফাখোরকে নির্মূল করতে বঙ্গবন্ধু যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তা তিনি নিজে বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। তাঁর দলও সেটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করেনি।
আলোচনা পর্বে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে, জাদুঘর পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছে। ১৪ ও ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক সব ভাস্কর্য, স্থাপনা ধ্বংস করা হচ্ছে, ভেঙেচুরে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে একটি মহল, যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এহেন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্তদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছে উদীচী।