জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ঢাকার কল্যাণপুরে জাহাজবাড়িতে ৯ তরুণ হত্যার অভিযোগে মামলায় সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকসহ তিনজনকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল এই আদেশ দেন। শহীদুল হক ছাড়া বাকি দুজন হলেন-ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও মিরপুর জোনের সাবেক ডিসি জসিমউদ্দিন মোল্লা। এদিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন জমা না দিয়ে সময় আবেদন করে। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৪ জুলাই এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দিন ঠিক করে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। চলতি মাসের ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখে পুলিশের সাবেক এই তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গত ২৪ মার্চ এই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। পুলিশের সাবেক এই তিন কর্মকর্তার নির্দেশ ও পরিকল্পনায় জাহাজবাড়ি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ। গুলশান হামলার ২৫ দিন পর ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বাড়িটির নাম তাজ মঞ্জিল হলেও ভবনের আকৃতির কারণে স্থানীয়রা একে জাহাজবাড়ি বলেন, আর সেই নামটি গণমাধ্যমেও উঠে আসে। অভিযান শেষে সন্দেহভাজন ৯ ‘জঙ্গির’ নিহত হওয়ার খবর আসে। হাসান নামে একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক হন। পালিয়ে যান একজন। তারা সবাই নব্য জেএমবির সদস্য বলেই দাবি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরদিন ২৭ জুলাই রাতে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো. শাহজাহান আলম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২), ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ ধারায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই ঘটনার ভিন্ন ভাষ্য আসতে থাকে। এর মধ্যে গত ৬ মার্চ জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ৯ তরুণ হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়।