করোনা আতঙ্কে ভুগছে পুরো বিশ্ব। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের নতুন লক্ষণ আবিষ্কার করেছেন সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানীরা! তারা গবেষণা করে জানিয়েছেন, একজন করোনার রোগী ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছেন বলে সন্দেহ করা হয়। পরে আরও এক রোগীর শরীরে ডেঙ্গুর লক্ষণ পাওয়া যায়। কিন্তু পরে দেখা গেছে তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
ওই রোগীদের মধ্যে একজন নারী ও একজন পুরুষ। তাদের উভয়ের বয়স ৫৭ বছর। প্রথম তাদের শরীরেই ডেঙ্গু ও পরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। গত সপ্তাহে ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালের এক গবেষণাপত্রে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়।
দেশটির ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হেলথ সিস্টেম, এনজি টেং ফঙ জেনারেল হাসপাতাল এবং পলিক্লিনিকস অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টাল হেলথ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এই গবেষণাপত্র লেখেন।
দেশটির চিকিৎসকরা বলেন, ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকা রোগীর শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রথমে তাদের সর্দি, কাশি বা গলা ব্যথা দেখা যায়নি। শ্বাস প্রশ্বাসেরও কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
ওই গবেষণাপত্রের লেখকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকার কারণে দ্রুত পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এই ঘটনাটি রোগী ও জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
তারা আরও জানিয়েছেন, আমরা করোনাভাইরাসের দ্রুত ও সংবেদনশীল ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার ওপর জোর দিচ্ছি। এটি জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত নির্ভুল হওয়া দরকার।
জানা গেছে, ওই দুই রোগীর শরীরে প্রথমে ডেঙ্গু পাওয়া যায়। পরে তাদের ডেঙ্গু রোগী হিসেবেই চিকিৎসা করা হচ্ছিল। কিন্তু পরবর্তী টেস্টে তাদের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এর মধ্যে এক ব্যক্তি গত মাসের ৯ তারিখে জ্বর সর্দি, কাশি ও কম রক্ত প্লাটিলেট নিয়ে হাসপাতালে যান। কিন্তু টেস্ট করার পর করোনা বা ডেঙ্গু ধরা পড়েনি। পরিস্থিতি খারাপ হলে আবারো অন্য এক হাসপাতালে যান। ধরা পরে ডেঙ্গু।
দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করে ডেঙ্গু পাওয়া যায়। তবে তার কাশি ছিল। এরপর আবারো পরীক্ষা করা হয়। তখন ডেঙ্গু আর পাওয়া যায়নি; তবে পাওয়া যায় করোনা।
তার মতো আরেক নারীও ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। গত মাসের ১৩ তারিখে হালকা কাশি, সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া ও পেশির ব্যথা নিয়ে ভর্তি হন। পরীক্ষা করে তার শরীরেও ডেঙ্গু পাওয়া যায়। পরে চিকিৎসা শেষে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ছাড়পত্র দেওয়ার দু’দিন পরই তিনি আবারো হাসপাতালে আসেন। ভর্তি হন। এর তিনদিন পরই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরেই পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। তাদের টেস্টের ফলাফলগুলো মিথ্যা বা ভুয়া ছিল।
গবেষণার লেখকরা জানিয়েছেন, তাদের ডেঙ্গু পাওয়ার ফলাফলগুলো ছিল মিথ্যা।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম