বগুড়ায় ইতালি ও কুয়েত থেকে আসা দুইজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দেশে ফেরার পর তাদের নিজ বাড়িতেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে। বগুড়া জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে তারা স্বাভাবিক রয়েছে।
বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইতালি থেকে ৭ মার্চ বগুড়া সদর উপজেলায় একজন ফিরেছেন এবং অপরজন সোনাতলা উপজেলায় কুয়েত থেকে কাতার হয়ে ৮ মার্চ দেশে ফিরেছেন। তারা স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের লক্ষণ নেই। কিন্তু তারপরও তাদের দুই সপ্তাহ ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতনতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা দরকার।
বুধবার ১১ মার্চ বগুড়া জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে আরও জানানা হয়েছে, বগুড়া সদর উপজেলায় ইতালি ফেরত একজন এবং জেলার সোনাতলা উপজেলায় কুয়েত থেকে কাতার হয়ে দেশে ফেরত এসেছেন একজন। এই দুইজনকে কোয়ারেন্টাইনে বা নিজ বাড়িতে অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। এমনকি তাদের খোঁজ খবরও নেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কোনো করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নেই। তারপরও তাদের দুই সপ্তাহ বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জেলায় নতুন করে হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা হাসপাতাল বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৪২ টি শয্যা, শাজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৫টি, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৪টি, টিএমএস মেডিকেলে ২০টি, প্রতিটি বেসরকারি ক্লিনিকে ২টি করে এবং জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি করে শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এগুলো সব পূর্ব প্রস্তুতি। জেলায় সবই স্বাভাবিক রয়েছে। প্রয়োজন অনুসারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে বগুড়ার নন্দীগ্রামেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গঠন করা হয়েছে ৬ সদস্যের মেডিকেল টিম ও জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। করোনা প্রতিরোধে পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে জরুরি সভা করা হয়েছে। সভায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষে উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬ সদস্যের আরেকটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া জরুরি সভায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কন্ট্রোল রুম খোলা, আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা, করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে আগত ব্যক্তিদের জন্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলাসহ নানা সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনো আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়নি। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আগাম সতর্কতা হিসেবে যে কোনো তথ্য দিতে নন্দীগ্রাম বিজরুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বিজরুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত গাউন ও মাস্কের সরবরাহ নেই। তবে এখন পর্যন্ত এই উপজেলায় কোনো করোনা রোগী এবং সন্দেহজনক কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নানা ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের হলরুমে আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত গাউন ও মাস্কের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন