সাধারণত ৫০ মিলিগ্রামের হেক্সিসল হ্যান্ড র্যাবের বাজারমূল্য ৩৮ টাকা। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ৫০ মিলিগ্রামের হ্যান্ডিওয়াশ সলিউশনের মূল্য ৪০ টাকা, এখন বিক্রি করা হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ২৫০ মিলিগ্রামের হ্যান্ডসক্র্যাবের বাজার মূল্য ২৫০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। পক্ষান্তরে একটি মাস্কের মূল্য ৫ টাকা, কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। ১০ টাকা মূল্যের কাপড়ের মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, ২০ টাকার কাপড় ও ফোম মিশ্রিত মাস্ক বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ২৫ টাকা মূল্যের ফিল্টার মাস্ক বিক্রি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
অভিযোগ আছে, গুজবের হুজুগের কবলে পুড়ছে পুরো দেশ। এই হুজুগকে পুঁজি করে সুযোগ কাজে লাগচ্ছে একশ্রেণীর অসাধু লোভাতুর ব্যবসায়ী। করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরপরই বাজারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। অসাধু পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের লোভাতুর মানসিকতার কারণে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। দেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। বর্ধিত চাহিদাকে পুঁজি করছে ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ৯ মার্চ ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সরবরাহ ও মূল্য সংক্রান্ত’ শীর্ষক একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে ওষুধ উৎপাদনকারী সাতটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের নাম ও মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের বাজারে এসব নির্দেশনা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে বর্তমানে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বর্ধিত মূল্যে বিক্রি করা হলেও তা অনেকটা দুস্প্রাপ্য ও বিরল পণ্যে পরিণত হয়েছে। ফার্মেসি ও দোকানগুলো এসব পণ্য পাওয়াই যাচ্ছে না। হুজুগের কবলে পড়েছে দেশ। তবে ফার্মেসিগুলো বলছে, এসব পণ্য তৈরিকরা কোম্পানিগুলো গত কয়েকদিন ধরে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বর্তমান হুজুগের সময়ে বাজারে যা ছিল তা দ্রুতই বিক্রি হয়ে যায়। বাজারে সংকট তৈরির পর কোম্পানিগুলো কোনো ঘোষণা ছাড়াই দাম বৃদ্ধি করে দিবে।
নাম প্রকাশ না করে এক ফার্মেসি মালিক বলেন, ‘৩৮ টাকার হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পাইকারি মূল্য ৮০ টাকা বলার কারণে আর ক্রয় করিনি। কারণ এত বর্ধিত মূল্যে তা ক্রেতাদের কাছে কি করে বিক্রি করব? উল্টো ক্রেতাদের গরম কথা শুনতে হবে।’
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের অহেতুক মূল্য বৃদ্ধি কোনো মতেই উচিত নয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকেই মাস্ক পড়তে হবে। সংকটের এই মুহুর্তে এমন মানসিকতা কখনোই কারো কাছে কাম্য হতে পারে না। তবে আমি বলব, সুস্থ মানুষের অযথা মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। সুস্থ মানুষরা মাস্ক কিনতে হুমড়ি খাওয়ায় এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আতঙ্ক নয় সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি চট্টগ্রামের সভাপতি সমীর কান্তি সিকদার বলেন, ‘দেশীয় একটি কোম্পানি মাস্ক তৈরি করে ফার্মেসিতে সরবরাহ করতো। কিন্তু কয়েকদিন ধরে তারা আর সরবরাহ দিচ্ছে না। সরবরাহ না থাকায় হাজারী লেনসহ ফার্মেসিগুলোতে এসব উপকরণ সংকট দেখা দিয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার