বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে ব্রিটেন ব্যতিত ইউরোপের সব দেশ থেকে আগামী ৩০ দিন আমেরিকায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় বুধবার জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, এই ‘বিদেশি ভাইরাস’ আমেরিকায় আসছে বিদেশি পর্যটকদের মাধ্যমে। বিশেষ করে ইউরোপ থেকে আসা পর্যটকদের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে নতুন সংক্রমণের প্রবেশ ঠেকাতে ইউরোপ থেকে সব ধরনের ভ্রমণ স্থগিত করব আমরা। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নতুন বিধি কার্যকর হবে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা ব্রিটেনের ওপর আরোপ করা হবে না বলে জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমেরিকা যে ধরনের পূর্বসতর্কতা গ্রহণ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তা ‘গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে’। এসময় তিনি জানান, ইউরোপ থেকে আমেরিকায় আসা বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ও পণ্যসম্ভারের ক্ষেত্রেও এই ভ্রমণ নিষেধজ্ঞা আরোপ হবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপের ২৬ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন। যেসব মার্কিন নাগরিক বিদেশে থেকে দেশে ফিরবেন তাদেরকে শুধু স্ক্রিনিং করে ছেড়ে দেওয়া হবে না। রাখা হবে কোয়ারেন্টাইনে।
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ-এর পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফাউসি কংগ্রেসে বলেছেন, এই করোনা প্রাদুর্ভাব আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এটা নির্ভর করছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতার ওপর। ভাইরাস পরীক্ষা করাতে বড় অংকের অর্থ খরচ হচ্ছে। তাই অনেক মার্কিনি পরীক্ষার খরচ যোগাতে অক্ষমতার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছেন না। অসুস্থ অবস্থায় কেউ বাসায় আইসোলেশনে থাকলে তার অনুপস্থিতিকে ছুটি হিসেবে গণ্য করে বেতন দেয়া হবে না- এমন ধারাও রয়েছে। এতে আরেকটি উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ফলে অনেক মানুষ ইচ্ছে করেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে না।
করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে নিউ ইয়র্ক সিটির উত্তরে নিউ রোচেলে শহরে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ওই শহরের সবাইকে নিজে থেকেই আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন লোকজনকে খাদ্য সরবরাহ দেবে ন্যাশনাল গার্ড।
এছাড়া, ওয়াশিংটন রাজ্যের গভর্নর বেশ কিছু কাউন্টি বা পাড়ায় বড় ধরণের সমাবেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আমেরিকার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি করোনা ভাইরাসের মূলকেন্দ্র হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
আমেরিকার ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৪৩ রাজ্যে করোনাভাইরাসের রোগী পাওয়া গেছে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি ও ২৩টি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন কমপক্ষে ৩৮ জন। আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার তিনশ এক ব্যক্তি। আর সুস্থ হয়েছেন ১৩ জন। সূত্র : পার্সটুডে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক