৩১ মার্চ, ২০২০ ১৫:০৬

প্রস্তুত চট্টগ্রামের রেলওয়ে হাসপাতাল

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

প্রস্তুত চট্টগ্রামের রেলওয়ে হাসপাতাল

মহামারী করোনাভাইরাস রোগের নানাবিধ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে চট্টগ্রামের সিআরবিস্থ রেলওয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতালকে। এখানে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে কোন রোগী নেই। এখানে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইনের জন্য এখনই প্রস্তুত এ হাসপাতালটি। অন্যদিকে চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালটি প্রস্তুত রাখতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বশীল মহাব্যবস্থাপক (জিএম) বরাবরে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। এই চিঠির প্রেক্ষিতে ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে রেলওয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ একটি চাহিদাপত্রও দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেয়া হয়নি পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক, নার্স ও ফার্মাসিসসহ কোন ধরণের চিকিৎসা সামগ্রী। তবে প্রয়োজন হলেই রেলওয়ের হাসপাতালটি ব্যবহার করা হবে, সেই ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটি হোম কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত আছে বলে জানান চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ ও রেলওয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইনের জন্য সিআরবিস্থ রেলওয়ে হাসপাতালটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রেলওয়ে হাসপাতালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বেড রয়েছে। করোনা বিষয়ে চট্টগ্রামের অবস্থা এখনও ভাল। তাই এ মুহুর্তে আশা করছি এসবের প্রয়োজন নেই, তবুও প্রস্তুুতি নিয়ে রাখা। তারপরও হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার মতো পরিবেশ তৈরি হয়, তাহলে ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় খাবার সামগ্রীও সরবরাহ করবে। তাছাড়া কোন ধরণের চিকিৎসাসেবার জরুরী দরকার হলে, তখন দ্রুত সময়ের মধ্যেই রেলওয়ের চাহিদা মোতাবেক জিনিসপত্র সরবরাহ করা হবে। এর আগে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক বরাবরে (জিএম) হাসপাতালটি প্রস্তুতি রাখতে চিঠিও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। 

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা (সিএমও) ডা. সামশুল আলম মো. ইমতিয়াজ বলেন, করোনা প্রতিরোধের জন্য রোগীদের সেবায় প্রস্তুতি রয়েছে চট্টগ্রামেও। চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবাও চলছে। রেলের হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে কিছুটা প্রস্তুতি রয়েছে। এতে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক বরাবরে প্রায় ১০ দিন আগে ডাক্তার, নার্স, চিকিৎসা সামগ্রী চেয়ে একটি চাহিদাপত্রও দেয়া হয়েছে করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য। এসব রোগীর জন্য বিশেষ চিকিৎসা সামগ্রী আগেই প্রস্তুত রাথতে হবে। তবে প্রয়োজন হলেই স্বাস্থ্য বিভাগ এসব জিনিসপত্র দ্রুত দিবেন এবং সংকটের মধ্যেও ক্রাইসিস মুহূর্তে করণীয় সম্পর্কে ঠিক করে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য ও রেলওয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক স্বাস্থ্য ডাঃ হাসান শাহরিয়ার কবীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে সম্ভাব্য করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রন প্রতিরোধ কল্পে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের ৫০ শয্যা সম্বলিত আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তের আলোকেই দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশে^ করোনাভাইস (কোভিট-১৯) ভয়াবহভাবে প্রাদুর্ভাবছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশও এ রোগের ঝুঁিকতে আছে। এতে করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) সংক্রমণ ও প্রতিরোধের জন্য সিআরবিস্থ রেলওয়ে হাসপাতালের ৫০ শয্যা সম্বলিত আইসোলেশন ওয়ার্ড (অবশ্যই সংযুক্ত বাথরুম ব্যবস্থা রাখাসহ) প্রস্তুত পূর্বক চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাসামগ্রী এবং মাস্ক-পিপিইসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে করোনা ভাইরাসের সকল প্রকার প্রয়োজনীয় লোকবলসহ জিনিসপত্র চেয়ে আরেকটি চিঠি রেলওয়ে থেকে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে পায় ১০ দিন আগেই। কিন্তু চিঠি পেলেও এখনও পর্যন্ত তেমন গুরুত্ব সমস্যা না হওয়ায় সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। তবে প্রয়োজন হলেই দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন করা হবে।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের ১১ জেলায় ১ হাজার ৪০০ আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে দাবি করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা.  শেখ ফজলে রাব্বি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনায় ঢাকা রেলওয়ে হাসপাতালে ১০০ বেডের আইসোলেশন প্রস্তুত রয়েছে। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলের সিআরবিস্থ রেলওয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স সংকটে বেকাদায়। এখানে মঞ্জুরীকৃত পদও অনুযায়ী নেই নার্স। সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে নার্সের সংখ্যা ৫ জন। তবে ক্লিনার আছে ৭ জন। এখানে করোনার জীবাণু প্রতিরোধক পোশাক তো নেই, নেই হ্যান্ড গ্লাবস-মাস্কও। আছে শুধুই কাগজে-কলমে।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

সর্বশেষ খবর