নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক পরিবারের উপর এলাকাবাসীর উশৃঙ্খল ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক শিল্পী আক্তারের পরিবারের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষনিক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে উচ্ছৃঙ্খল লোকজনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে পরিবারটি। এ পরিবারের মোট ১৮ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকায় আক্রান্ত ওই পরিবারটিকে উশৃঙ্খল লোকজন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। চিকিৎসক শিল্পী আক্তার স্বপরিবারে ফতুল্লার দেলপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ইউএনও নাহিদা বারিক ওই এলাকায় গিয়ে উচ্ছৃঙ্খল লোকজনদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি শান্ত করে বাড়িটিকে লকডাউন করেন।
এরপর মাইকে এলাকাবাসীকে নিজ নিজ ঘরে থাকার অনুরোধ করে করোনা সম্পর্কে ধারনা দেন ইউএনও। এছাড়া আক্রান্ত পরিবারের কাছে খাবার পৌঁছে দেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাকে ফোন করার অনুরোধ করেন ইউএনও নাহিদা বারিক। ডাক্তার শিল্পী আক্তার জানান, আমি বাড়ি থেকে ফোন পাই এলাকাবাসী বাড়িতে ঢিল ছুঁড়ছে। পরে দ্রুত প্রশাসনকে অবহিত করি।
তিনি আরও বলেন, তার ছোট ভাই আনিসুর রহমান প্রতিদিন বাসা থেকে তার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দুপুরের খাবার নিয়ে আসত। এতে হঠাৎ সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর করোনা টেস্ট করালে পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পরে পরিবারের আরো ১৬ জন সদস্য ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে আক্রান্ত হয়। তাদেরও টেস্ট করা হলে পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এতে পরিবারের ১৭ জনকে বাসায় রেখে তিনি নিজেই চিকিৎসা করছেন।
ইউএনও নাহিদা বারিক জানান, ডাক্তার শিল্পী আক্তার নিজেই তার পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা করছেন। তাদের বাসায় সাত বছর বয়সের একটি শিশু ছাড়া ১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদেরকে ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। উচ্ছৃঙ্খল লোকজনদের ধাওয়া করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই এলাকার আশপাশের বাজার দূরত্বে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
ইউএনও আরও জানান, কুতুবপুর ইউনিয়নের ভূইগড় কাঁচাবাজার হাজী পান্দে আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, দেলপাড়া কাঁচা বাজার দেলপাড়া খেলার মাঠে, শাহী বাজার অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে মাঠে, পাগলা বাজারকে স্থানীয় মেম্বার ও বাজার কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারির সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী বড় রাস্তার খালি জায়গায় এবং বউ বাজার পার্শ্ববর্তী রেল লাইন সংশ্লিষ্ট খালি জায়গায় স্থানান্তর করে প্রতিটি দোকান কমপক্ষে ৬ থেকে ১২ ফুট দূরত্বে বসানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ