বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মৌলভীবাজারে স্টিকারে চলছে নম্বরবিহীন সিএনজি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারে স্টিকারে চলছে নম্বরবিহীন সিএনজি

মৌলভীবাজারে মাসোয়ারা স্টিকার বাণিজ্যে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ট্রাফিক বিভাগ, সিএনজি শো-রুম ও  শ্রমিক নেতারা। সিএনজি ও টমটমে স্টিকার বিক্রি করে মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে। গাড়ির লাইসেন্স থাকুক বা নাই থাকুক মাসোয়ারা স্টিকার থাকলেই গাড়ি রোডে চালানো যায়। গাড়ির কাগজ কিংবা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলেও ট্রাফিক পুলিশ সিএনজি কিংবা টমটমে স্টিকার দেখলেই ছেড়ে দেয়। এতে বেপরোয়া হয়ে উঠছেন ড্রাইভাররা। বাড়ছে যানজট ও দুর্ঘটনা। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রতি মাসে দুর্ঘটনার ৭০ শতাংশ সিএনজির কারণেই হয়ে থাকে। অধিকাংশ স্টিকার শো-রুম ও শ্রমিক নেতারা বিক্রি করলেও ওই অবৈধ কাজের কালেমা জেলা পুলিশ বিভাগের কপালে লেপন হচ্ছে। যার ফলে গোটা পুলিশ বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। কিন্তু জেলার সচেতন নাগরিকরা বলছেন, পরোক্ষভাবে ট্রাফিক পুলিশ স্টিকার বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। একটি সূত্র জানায়, আদায়কৃত টাকার একটি অংশ ভাগবাটোয়ারা হয় বিভিন্ন মহলে। জেলা বিআরটিএ অফিস থেকে জানা যায়, এ যাবত জেলায় ২৪ হাজার সিএনজির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে কাগজ আপডেট আছে ১০ থেকে ১২ হাজারের। এদিকে ১ হাজার ৫০০ টমটমের রেজিস্ট্রেশন দিলেও এখন  কোনোটারই কাগজ আপডেট নেই। রেজিস্ট্রেশনের বাইরেও ৪ থেকে ৫ হাজার অনটেস্ট গাড়ি রয়েছে। লাইসেন্স না নিয়েও স্টিকার দিয়ে গাড়ি চালাতে পারায় বছরে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। জানা যায়, বিশেষ করে স্টিকারের আওতায় আনা হয়েছে জেলার প্রায় ১৫ হাজার সিএনজি, অটোরিকশা ও টমটমকে। প্রতি মাসের ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে গাড়ির সামনের গ্লাসে লাগাতে হয় সিএনজি শো-রুম, ট্রাফিক পুলিশ ও সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে সরবরাহকৃত নির্ধারিত মাসোয়ারা স্টিকার। স্টিকারে লেখা থাকে সাংকেতিক বিভিন্ন স্লোগান। আবার কোনো কোনো শো-রুম মাসের নাম কিংবা নম্বর লিখে স্টিকার মাঠে ছাড়ে। ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা গাড়ির কাগজ অনিয়মিত এবং সদর উপজেলার মধ্যে গাড়ি চললে ২৫০ টাকা এবং অনটেস্ট ও পুরো জেলা হলে ১ হাজার টাকা মূল্যের স্টিকার কিনতে হয় ড্রাইভারদের। টমটমের জন্য ২০০ টাকার স্টিকার।   সরেজমিন দেখা যায়, মৌলভীবাজার সিএনজি অটো রিকশা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি., মৌলভীবাজার সিএনজি ইউনিট কমিটি ও মক্কা-মদিনাসহ বিভিন্ন স্লোগান ও সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে গাড়ির সামনে স্টিকার লাগানো। হানিকম জাতীয় স্টিকার লাগানো হয় যাতে দূর থেকে কেউ এটা বুঝতে না পারেন। সেপ্টেম্বর মাসের স্লোগান ছিল ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে মৃত্যু ঝুঁকি আছে’, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন নিরাপদে পথ চলুন।’ এদিকে টমটমে রয়েছে চৌমুহনা অটো টমটম গ্রুপ পরিচালনা কমিটি, ডি বি, বি এস, কে এস ও সি এসসহ একাধিক সংগঠন। ওই সব স্ট্যান্ড  থেকে স্টিকার সরবরাহ করা হয়। মাসের শুরুতে স্ট্যান্ডের দায়িত্বরত ব্যক্তির কাছে পৌঁছানো হয় স্টিকার। ড্রাইভাররা মাসের ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে কিনে গাড়িতে লাগাতে হয়। অন্যথায় রোডে গাড়ি চালানো যায় না। পৌর শহরের মাছের আড়ৎ, ভুজবল, ভৈরববাজার, শ্রীমঙ্গল, শেরপুর, সরকারবাজার, খলিলপুর, ঘয়গড়, কাগাবালা, দিঘীরপাড়, আটঘর, বাহারমর্দন, মোহাম্মদপুর, সমসেরগঞ্জ, নতুনবাজার এলাকায় এসব গাড়ি দেখা যায়।

সর্বশেষ খবর