শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়ম

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরের মুজিবনগরে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নামমাত্র অভয়াশ্রম  তৈরির অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। চলতি বছরের ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফার কাজের মেয়াদ শেষ হলেও সেভাবেই পড়ে আছে অভয়াশ্রমটি। জেলা মৎস্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ ২ (এনএটিপি-২) প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মাছের অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য মুজিবনগর উপজেলার দাদপুর বিলের টুপলার অংশে প্রায় ১ হেক্টর জলাশয়ের ওপর মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী কোটেশনের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলার রেজাউল হক নামের এক ঠিকাদারকে অভয়াশ্রম তৈরির কাজ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয় মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য অধিদফতরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাজমুস শাকিবকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। পরে নামমাত্র অভয়াশ্রম তৈরি করে কাজ শেষ বলে দাবি করে ঠিকাদার। দাদপুর বিলের টুপলার অংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরির জন্য ২৫ বর্গ ইঞ্চি মোটা ও ১৫ ফিট উচ্চতার ১২টি  উন্নতমানের আরসিসি পিলার দেওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে কম ও নিম্নমানের অডিনারি আরসিসি পিলার। এ ছাড়াও ১৯ ফিট সাইজের ১ হাজার ৯০ পিচ বাঁশ ও তেঁতুল, বরই, আম ও জাম গাছের সাইজ ডালপালা ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে কম উচ্চতার বাঁশ ও বিলের আশপাশের ঝোপঝাড়। ৩০০ বাই ৪৫০ মিলিমিটার ১শ’ পিচ লাল ফ্লাগ দেওয়াার কথা কিন্তু  দেওয়া হয়েছে ছোট ছোট ৪ পিচ।

উপজেলা মৎস্য অধিদফতরের তদারকির পরও কেন এমন অনিয়ম হলো তার তদন্ত হওয়া উচিত। এ বিলের উপকারভোগী শ্রী আনন্দ হালদার বলেন, অভয়াশ্রম তৈরিতে নির্ধারিত এস্টিমেটের চার ভাগের একভাগ কাজ হয়েছে। আমরা বার বার বলার পরও সঠিকভাবে কাজ করেনি টিকাদার। সেই সঙ্গে উপজেলা মৎস্য অফিসেরও কাজের ব্যপারে তেমন কোনো তদারকি ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।  অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের কথা স্বীকার করে মুজিবনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরিতে অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

 অভিযোগ পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসে। পুনরায় সঠিকভাবে অভয়াশ্রমটি তৈরির নির্দেশ দেন। কিন্তু ঠিকাদার অসুস্থ থাকায় এখনো কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদার রেজাউল হক মোবাইল ফোনে জানান, আমার যখন সময় হবে তখন আমি কাজ করব। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকোনুজ্জামান বলেন, আমরা ঠিকাদারের কাজের বিল দেওয়া বন্ধ রেখেছি। সঠিকভাবে কাজ না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না।

সর্বশেষ খবর