সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনাকে হারালে পথ হারাবে বাংলাদেশ

------- শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে কৈশোর ও যৌবন হারিয়েছিলাম। শেখ হাসিনাকে হারালে পথ হারাবে বাংলাদেশ। মানুষের দেহমূল হচ্ছে মাথা। বাংলাদেশের মূল হচ্ছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ নন, তিনি বাংলাদেশের সম্পদ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান চন্দন শীল ও সদস্যদের আনুষ্ঠানিক দায়িত্বভার গ্রহণ অনুষ্ঠানে গতকাল বিকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন এমপি শামীম ওসমান। তিনি  বলেন, নেত্রী বলেছেন, ‘নো আলোচনা’। খুনিদের সঙ্গে কীসের আলোচনা। তারা কী করতে চায়, ওরা লাশ চায়। যে তিনটা জায়গাকে টার্গেট করা হয়েছে তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ এক নম্বরে।

তিনি বলেন, অনেকে বলেন আমি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছি। আমি যাইনি, আমি পঙ্গু ছিলাম। নেত্রীর নির্দেশে আমাকে যেতে হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম মরতে নয়, মারতে সৃষ্টি হয়েছি। মারতে বলতে অস্ত্র হাতে মারা নয়, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা।

শামীম ওসমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার সময় বাজেট ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। আজ শেখ হাসিনার বাজেট ৬০ লাখ কোটি টাকা। নেত্রী বলেছেন উন্নয়ন না দেখলে চোখে চশমা পড়ুন। উন্নয়ন যা হওয়ার হয়েছে। কিন্তু রাজনীতির মাঠে কারা নেমেছে? কী হচ্ছে দেশে? কারা মাঠে নেমেছে?  আমি আমার দেশের জন্য রাজনীতি করি। আমরাও পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেছি, গুলি খেয়েছি। লাশ নিয়ে গোরস্তান যেতে পারিনি। সম্মান দেখাতে চেয়েছিলাম। স্লোগানও ছিল না। তবুও আমাদের গুলি করা হলো। একটা লাশ তাদের হাত থেকে নিস্তার পায়নি। সেই লাশ থেকে ৭০টা গুলি বের করেছি। পরে লিংক রোডের পাশে তাদের দাফন করেছি। আমরা কাউকে আঘাত করিনি। নারায়ণগঞ্জে অনেক খুনির আস্ফালন দেখছি।

বিএনপির চেয়ারপাসেনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকারের প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, বিএনপি নেতা তৈমূর ভাইয়ের ছোট ভাই সাব্বিরকেও হত্যা করা হয়েছিল মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায়। আমাদের কর্মীদের মারা হলো, আমার বড় ভাইয়ের ওপর হামলা-নির্যাতন হলো। আমরা কাউকে টাচ করিনি, কাউকে মিথ্যা মামলাও দেইনি। আমি ভোটে পাস করেছিলাম। নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন ঢাকা বিভাগে একমাত্র তুমি (শামীম ওসমান) পাস করেছ। সেখানে আমাদের নেতাদের গণহারে গ্রেফতার করা হলো। আমরা এগুলো মোকাবিলা করেছি।

বিএনপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বলতে চাই, আপনারা ক্ষমতার কাছেও আসবেন না। আপনারা আপনাদের পলাতক নেতার নির্দেশে মাঠে লাফাচ্ছেন। মিষ্টির দোকানের সামনে বড় তাওয়া থাকে। সে তাওয়া চুলায় বসিয়ে গরম করা হয়। গরম হওয়ার পর সেটায় পরোটা দেয়, এক সেকেন্ডে হয়ে যায়। আপনারাও তাওয়া। আপনাদের গরম করে তারা খেলছে। বিএনপিতে এখন আম্মা গ্রুপ ও ভাইয়্যা গ্রুপ। যে মায়ের চিন্তা করে না, দেশের চিন্তা সে কী করবে। বিএনপি ২০১৩ সাল থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৫২টি গাড়ি পুড়িয়েছে। ৫০০ জন মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এগুলো কার নেতৃত্বে হয়েছে? তাদের নেতা তারেক রহমান। আগে একটা চেয়ার খালি থাকত, এখন দুটো খালি থাকে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ওরা শান্ত হয়নি। জননেত্রীকে ২১ বার মারার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের ছোট ছোট ছেলেদের মারা হয়েছে। যখন হতাশ হই তখন ১৬ জুন চাষাঢ়া বোমা হামলায় দুই পা হারানো এই চন্দনের (মঞ্চে উপস্থিত) সঙ্গে কথা বলি।

তিনি বলেন, সারা দুনিয়ায় আজ সংকট। সেখানে শেখ হাসিনা এ দেশকে ধরে রেখেছেন। এই সুযোগটা শকুনরা নিতে চায়। এ শকুন শুধু বিএনপি জামায়াতরা না, আরও অনেকেই আছে। তারা ভাবে ভোটে তো আসতে পারবে না, দেখি অন্য কোনো পথে আসা যায় কি না।

শামীম ওসমান উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, শুধু একটা কথা বলতে চাই- দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন ধরে রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তাই শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার। সেই ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য একটাই হবে  তা হলো আমরা সবাই একসঙ্গে মাঠে নামব। কোনো বিরোধ নয়। কে কী কাকে বলেছে, এসব মনে না রেখে আসুন একসঙ্গে অপশক্তির বিরুদ্ধে মাঠে নামি। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাজাহান ভূঁইয়া, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশীদ ও আড়াইহাজার উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম হ্যালো সরকার প্রমুখ।  

সর্বশেষ খবর