রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

৫০ বছরেও হয়নি সেতু

দুর্ভোগে ১৭ গ্রামের মানুষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

৫০ বছরেও হয়নি সেতু

সরাইলের ছেত্রা নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের ছেত্রা নদীর দুই পাড়ের ১৭টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ একটি সেতুর আশায় কেটেছে প্রায় ৫০ বছর। স্থায়ী সেতুর জন্য অনেক জনপ্রতিনিধি বারবার আশ্বাস দিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে নদীর ওপর সাড়ে ৬০০ ফুট লম্বা ও ৫ ফুট প্রশস্তের এ বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে দুই পাড়ের মানুষজন শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করলেও বর্ষা মৌসুমে তাদের দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকে না। ফলে শিক্ষা, কৃষিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।  স্থানীয় লোকজন জানান, দুর্ভোগ লাঘবে প্রায় ২৪ বছর আগে গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ছেত্রা নদীর ওপর অরুয়াইল-পাকশিমুল সংযোগ বাঁশের সাঁকো তৈরি হয়। বছরের কার্তিক মাস থেকে শুরু হয়ে জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ৮ মাস গ্রামবাসীকে এ সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করতে হচ্ছে। সাঁকোই তাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ হাজার মানুষ এ বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে আসা যাওয়া করছেন। এ ছাড়া শতাধিক মোটরবাইক ও অর্ধশত অটোরিকশা চলাচল করে। এ সাঁকো দিয়ে চলাচলকারী কাউসার মিয়া বলেন, বাংলাদেশের সব জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে। কিন্তু আমাদের গ্রামের নদীর ওপর যে সেতুটি আজ ৫০ বছর ধরে হচ্ছে না। যদি দ্রুত এ সেতুটি সরকার নির্মাণ করে দেয় তাহলে আমাদের গ্রামের মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির  হোসেন বলেন, বর্ষাকালে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে নৌকা ব্যবহার করা হলেও শুষ্ক মৌসুমে আমাদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ বাঁশের সাঁকো। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা এখানে স্থানীয় সেতুর প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। সেতুর অভাবে ওই এলাকার মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছেন। নারী বাসিন্দা কমলা রানী বলেন, গর্ভবর্তী মহিলাদের জন্য এ বাঁশের সাঁকোটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় প্রত্যন্ত গ্রামে নারীদের প্রসব ব্যথা শুরু হলে এর ওপর দিয়ে হেঁটে নিয়ে যেতে হয়। সরকার যদি এখানে একটি সেতু নির্মাণ করে দেয় তাহলে আমাদের চলাচলের অনেক উপকার হবে। কলেজছাত্র রাসেল মিয়া বলেন, পাঁচ-ছয়টি গ্রাম  থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ছাত্রছাত্রী বাঁশের সাঁকো দিয়ে আসা যাওয়া করে। বর্ষা মৌসুমে ঝড় তুফানে এ সাঁকো ভেঙে যায়। ফলে সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারি না। অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে দুটি ১৭ গ্রামের মানুষ আসা যাওয়া করে। অনেকবার উদ্যোগ নিয়েছি। এখনো আলোর মুখ দেখেনি। সরকার যদি স্থায়ীভাবে ব্রিজ নির্মাণ করে তাহলে আমাদের এলাকার মানুষ লাভবান হতো।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৗশলী আবদুল মান্নান জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে আন্ডার হান্ড্রেড মিটার প্রকল্পের আওতায় ছেত্রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুমোধন পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।

 

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর