চিকিৎসকসহ নানা সংকটে জোড়াতালি দিয়ে চলছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা। এ অঞ্চলের প্রায় ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থল এ হাসপাতাল। জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হচ্ছে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই রোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এ হাসপাতালে মেডিকেল অফিসারের পদ আছে ৯টি, কর্মরত আছে চারজন। আয়ুর্বেদিক এক, ডেন্টাল একজন। কনসালট্যান্ট ১১টি পদের মধ্যে রয়েছে মাত্র চারজন। সার্জারি একজন, গাইনি ১ অ্যানেসথেসিয়া এক এবং অর্থোসার্জারি একজন। এর ফলে বিভিন্ন জটিল রোগ নিয়ে আসা আন্তবিভাগ ও বহির্বিভাগের রোগীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে অনেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছে। কেউবা প্রাইভেট কোনো ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জের নিতাই এলাকা থেকে আসা আবুল হোসেন বলেন, টিকিট কেটেও আমি চিকিৎসক দেখাতে পারিনি। এখানে রোগীর চাপ অনেক কিন্তু চিকিৎসক নেই।
মরিয়ম বেওয়া বলেন, বিভিন্ন রোগ নিয়ে হাসপাতালে এসে ডাক্তার না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। আমরা অনেক কষ্ট ভোগ করছি।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এ বি এম তানজিমুল মিল্লাত বলেন, ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের চিকিৎসক সংকট রয়েছে। চিকিৎসকসহ অন্যান্য শূন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নীল রতন দেব বলেন, আপাতত ছোট অপারেশন চালু আছে। বড় অপারেশনের মধ্যে হার্নিয়া, হাইড্রোসিল, অ্যাপেন্ডিসাইট চলমান। নরমাল ডেলিভারি সিজার অপারেশনসহ মাতৃত্বকালীন সব সেবা চালু আছে। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে জনবল সংকট কাটিয়ে না উঠলে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন কঠিন হয়ে যাবে।