আষাঢ় শেষ হলেও লালমনিরহাটে এখনো বৃষ্টির দেখা নেই। আকাশে মাঝেমাধ্যে মেঘ জমলেও বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠঘাট হয়ে গেছে পানিশূন্য। এতে আমন ধান চাষে বিপাকে পড়েছেন জেলার কয়েক লাখ কৃষক। বাধ্য হয়ে তারা সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ করছেন। এতে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে প্রতি একরে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটে ৪৫টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৫৩ হাজার ৫০৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৬৭৩ টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনেক কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে ধানবীজ ও সার। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, পানির অভাবে অনেক জমি এখনো ফাঁকা পড়ে আছে। কিছু জমিতে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আবার কোথাও কোথাও চারা শুকিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত মাত্র ১০ থেকে ১৫ ভাগ জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। মাঠে কাজ করা কৃষকরা এখন আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বৃষ্টির আশায়।
উপজেলার শিয়ালখোওয়া গ্রামের কৃষক শাহালী, আমিনুল ইসলাম, হাসিম ও গঙ্গা বলেন, ‘আষাঢ় শেষ হয়ে গেল, শ্রাবণ শুরু। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছি। এতে প্রতি একরে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।’
কৃষক আকবর বলেন, ‘কী করমু, হামার পোড়া কপাল। আকাশ মেঘ করলেও বৃষ্টি নাই। পানি কিনি ধান নাগাইছি, সকালে পানি দিলে বিকালে থাকে না। বৃষ্টি না হলে হামরা মাঠে মারা পড়মু।’
উপজেলার গোড়ল ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। অনেক জমিতে পানি যাওয়ার উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নেই। ফলে পলিথিন পাইপ বসিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে। আমরা কৃষকদের নানা পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিচ্ছি।’
জেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইখুল আরেফিন বলেন, ‘বৃষ্টি না থাকায় খরচ কিছুটা বেশি হচ্ছে। তবে আমরা কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করছি, যাতে তারা বড় কোনো সমস্যায় না পড়েন।’