ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বাড়তি ভাড়া আদায় ও নকল লাইসেন্সের বিরুদ্ধে অভিযানে কয়েকজন বাস চালক-হেলপারকে জেল-জরিমানার 'প্রতিবাদে' রবিবার সকাল থেকে শুরু করা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন গণপরিবহন শ্রমিকরা। তবে এখনও রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে রাস্তায় অপেক্ষায় রয়েছে হাজারও যাত্রী।
ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাচ্চু বলেন. 'বিআরটিএ-এর সঙ্গে সমঝোতায় সন্ধ্যায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিআরটিএ আশ্বাস দিয়েছে শ্রমিকদের কথায় কথায় হ্যান্ডকাফ পরানো হবে না।'
গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মিরপুরের তালতলায় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের সামনে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম আল-আমীনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ অভিযানে কয়েকজন চালক ও হেলপারকে জরিমানা করা হয়। এছাড়া মিরপুর-গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী 'হিমাচল পরিবহনের' হেলপার আবুল হোসেনকে (২৬) এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
এর 'প্রতিবাদে' নগরীর অন্যতম ব্যস্ত সড়ক মিরপুর-গুলিস্তান রুটে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় মিরপুর-আজিমপুর-গুলিস্তান-মতিঝিল; গাবতলী-উত্তরা-আজিমপুর; গাবতলী-গুলশান-বাড্ডা রুটসহ মিরপুর ১১ নম্বর হয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নামিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েন হাজারো যাত্রী।
দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। মিরপুরের বাস না পেয়ে অন্যান্য রুটের বাসে ছিল উপচেপড়া ভিড়। যাদের সামর্থ্য ছিল তারা অটোরিকশা ও রিকশায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান। আর যারা অন্য রুটের বাস পেয়েছেন তারাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ছিলেন যানজটে।
গ্যাসের দাম বাড়ায়, গত ১ অক্টোবর সরকারি সিদ্ধান্তে গণপরিবহনের ভাড়া কিলোমিটারে ১০ পয়সা বাড়ানো হয়। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, মালিকরা কিলোমিটারে একটাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়িয়েছেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচলনা করছে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দাবি, ভ্রাম্যমাণ আদালত 'নানা অজুহাতে' নিয়মিতই তাদের হয়রানি করছে। কথায় কথায় জেল জরিমানা করছে। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে বিআরটিএ-এর ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রট আবুল বশর বলেন, 'যে বাস অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে শুধু তাদেরই সাজা দেওয়া হচ্ছে। আদালত কাউকে হয়রানি করেনি।'
সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, 'সরকারের আশ্বাসে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পরিবহন শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকদের যখন তখন জেল-জরিমানা করা হবে না।'
বিডি-প্রতিদিন/১৮ অক্টোবর ২০১৫/ এস আহমেদ