গাংনী উপজেলার গাড়াডোব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফেয়া নাজমিনের ফেসবুকের স্ট্যাটাস 'রঙিন জামা' বদলে দিল দাস সম্প্রদায়ের ১০ শিশুর পূজার আনন্দ।
গাড়াডোব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফেয়া নাজমিন বলেন, 'গত সপ্তাহে ২য় শ্রেণির পিছিয়ে পড়া কিছু ছাত্র-ছাত্রীর ক্লাস নিচ্ছিলাম। এসময় লক্ষ করলাম সঞ্জিব নামে একটি ছেলের গায়ে স্কুল ড্রেস নেই, আবার সে যে জামাটি পরে আছে সেটিও এত জায়গায় ছেড়া যে তা মেরামত করলেও ব্যবহারের যোগ্য হবে না। তাই তাকে পরবর্তী দিন থেকে স্কুল ড্রেস পরে স্কুলে আসতে বললাম। সে জানায় তার এই একটিই জামা। আমি সঞ্জিবকে বলি রিডিং পড়াটা ভালোভাবে শিখলে আমি তাকে একটি নতুন জামা কিনে দেব। পরে দাস পাড়ায় খোঁজ নিয়ে জানলাম এরকম সঞ্জিব ওখানে রয়েছে অনেকগুলো। যাদের স্কুল ড্রেসতো দূরের কথা পূজার জামাটিও অনিশ্চিত। হাতে গুনে আমার স্কুলে এরকম ১০ শিশুর খোঁজ পেলাম। মনে হলো যদি এই শিশুগুলোর সবার গায়ে পূজায় একটি করে রঙিন জামা দিতে পারতাম তাহলে কি আনন্দ না হয়। কিন্তু এতগুলো শিশুর জামা কিনে দেওয়ার সামর্থ আমার নেই। তাই রঙিন জামা চাই লিখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম- ''আমি এই ছেলে-মেয়েগুলোর পূজার পোশাকের ব্যবস্থা করতে চাচ্ছি, আপনি চাইলে আমার এ কাজে সাড়া দিতে পারেন।'' পরে আমার এ ফেসবুকের স্ট্যাটাসে সাড়া দিয়ে অনেকে এগিয়ে আসেন এবং তাদের পাঠানো টাকায় ১০ শিশুর নতুন জামা-জুতো সহ তাদের মাকে শাড়ি ও বাবাকে লুঙ্গি উপহার দেওয়া হয়েছে।'
প্রধান শিক্ষক তোরিফা নাজমিন আরো বলেন, যারা আমাকে এই সুখের সন্ধান দিলেন তাদের জানাই আন্তরিক ভক্তি ও শ্রদ্ধা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন বলেন, এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আজ এই ১০ শিশু ও তার পরিবারের মাঝে যে পূজার আনন্দ এই প্রধান শিক্ষক এনে দিতে পেরেছেন এজন্য তাকে ধন্যবাদ। প্রতিটি শিক্ষক যদি তার স্কুলের ছেলে মেয়েদের প্রতি এভাবে নজর রাখেন তাহলে আমাদের সমাজে অবহেলিত শিশু থাকবে না।
বিডি-প্রতিদিন/২২ অক্টোবর ২০১৫/ এস আহমেদ