শীত মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকদের ঢল নামতে শুরু হয়েছে পর্যটননগরী রাঙামাটিতে। প্রায় প্রতিদিন দেশী-বিদেশী হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনে উপচেপড়া ভিড় জমছে এ পাহাড়ি অঞ্চলে। একে শীত মৌসুম, অন্যদিকে বিজয় দিবসের উল্লাস। রাঙামাটি যেন এখন উৎসবের নগরী। সর্বত্র সাজ সাজ রব। চারদিকে মানুষের হই-হুলা। সব মিলে পাহাড়ি কন্যা রাঙামাটি এখন আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। পর্যটকের পদাভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে এ পাহাড়ি জনপদ।
জানা গেছে, শীতের ঘন কুয়াশা। আর সবুজ ঘাসের শিশির। পাহাড়ে বুকে মেঘের লুকোচুড়ি এমনি এক আকর্ষণীয় পরিবেশের মধ্যদিয়ে পার্বত্য জনপদে আগমন ঘটেছে এবারের পর্যটন মৌসুম। যার টানে ছুঠে আসছে দূর-দূরান্ত থেকে অগণিত দেশী-বিদেশী পর্যটক। তাই শহরের প্রায় আবাসিক হোটেলে ভিড় লেগেই আছে। রয়েছে অগ্রিম বুকিংও। কোথাও রুম খালি নেই। কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সগুলো।
এব্যাপারে রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. নেছার আহমেদ জানান, শীতের তীব্রতা যত বাড়ছে, রাঙামাটিতে পর্যটকের আগমনও তত বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিন অগ্রিম বুকিং লেগে আছে। বুকিং থাকবে ডিসেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত। রাঙামাটিতে প্রায় সময় বিদেশী পর্যটক ঘুরতে আসছে। তাছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাঙামাটির সব হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টেও সিসি টিভি ক্যামরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
রাঙামাটি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, সম্প্রতি রাঙামাটিতে পর্যটকের আগমন বেড়েছে। পর্যটন মোটেলে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৫ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটছে। বর্তমানে রাঙামাটি পর্যটন মোটেলের দৈনিক রাজস্ব আয় হচ্ছে গড় প্রায় লাখ টাকা। এখন পর্যটন মোটেলের কটেজসহ সমস্ত আবাসিক কক্ষ বুকিং রয়েছে। পুরো ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত একের পর এক অগ্রিম বুকিং লেগে আছে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ জানান, রাঙামাটি একটি সম্প্রীতির শহর। পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে রাঙামাটিতে ঘুরে বেড়াতে পারেন তার জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তাছাড়া যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন সর্বাত্মক মোতায়েন রয়েছে।
অন্যদিকে, পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের আনন্দ ও মনোরঞ্জন জোগানোর জন্য রাঙামাটিতে অসংখ্য নৈসর্গিক আবেশ ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সরকারি পর্যটন মোটেল ছাড়াও ডিসি বাংলো, পেদাটিংটিং, সুবলং ঝর্ণা ও পর্যটন স্পট, টুকটুক ইকো ভিলেজ, গিরিশোভা ভাসমান রেস্তোরাঁ, পৌর পার্ক, সুখী নীল গঞ্জ, উপজাতীয় যাদুঘর, রাজবন বিহার, চাকমা রাজার বাড়ি, বীরশ্রেষ্ট মুন্সি আবদুর রউফের স্মৃতিসৌধসহ ইত্যাদি মনোরম ও নয়নাভিরাম স্পট ও স্থাপনা সত্যিই যে কোন পর্যটককেই কাছে টানে। শিহরিত করে তোলে স্বচ্ছ কাপ্তাই হ্রদের জলে নৌ বিহারের মতো রোমাঞ্চকর নৌ-ভ্রমণ।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব