পৌরসভা নির্বাচনের রেশ না কাটতেই বগুড়া জেলায় শুরু হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তোড়জোড়। জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলছে প্রার্থী নিয়ে গুঞ্জন। ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শুরু করেছেন। শুভেচ্ছা পোস্টার ছাপিয়ে ইউনিয়ন এলাকায় প্রার্থীতার জানান দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির সাথে সাথে রাজনৈতিক দলগুলোও দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে কাজ শুরু করেছে।
বগুড়া জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ১০৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া সদরে ১১টি, শিবগঞ্জে ১২টি, সারিয়াকান্দিতে ১২টি, সোনাতলায় ৭টি, ধুনটে ১০টি, শেরপুরে ১০টি, কাহালুতে ৯টি, নন্দীগ্রামে ৫টি, আদমদিঘিতে ৬টি, দুপচাঁচিয়ায় ৬টি, গাবতলীতে ১১টি ও শাজাহানপুরে ৯টি।
বিভিন্ন ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। সরকার দলীয় প্রতিকে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিধান চালু করায় রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে উপজেলা ও জেলা নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন। আবার ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় নেতা এমনকি মন্ত্রীদের কাছেও যাচ্ছেন মনোনয়নের জন্য।
সব মিলিয়ে স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তরের নির্বাচন কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়নের পাশাপাশি ভোটারদের সাথে সাক্ষাত্ নতুন বছরের ক্যালেন্ডার বিতরণ, ঘরোয়া সভা, সমাবেশ ও শুভেচ্ছা পোস্টার, ব্যানার ছড়িয়ে দিয়েছেন নিজেদের এলাকায়। তারা একইসাথে এলাকার বিদ্যমান সমস্যা সমাধান, নতুন করে উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। সবাই বিভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন।
এদিকে, মামলা, গ্রেফতার, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর হয়রানিসহ নানা কারণে বিপর্যস্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাদের বেশীর ভাগ রাজনৈতিক মামলায় কেউ কেউ জেলে, কেউ পলাতক জীবন যাপন করছেন। ফলে ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সদর্পে নিজেদের এলাকা চষে বেড়ালেও বিএনপি জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বেশীর ভাগ প্রকাশ্যেই আসতে পারছেন না। তবুও তাদের অনেকে আত্মগোপনে থেকে নিজের এলাকায় প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন।
নির্বাচনী প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, জেলার ১০৮টি ইউনিয়নের মধ্যে কতটি ইউনিয়ন এ মূহর্তে নির্বাচন উপযোগি তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পাওয়া গেলে তা চূড়ান্ত করা হবে।
বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মো. শোকরানা জানান, জেলা বিএনপি ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে কাজ শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় থেকে নির্দেশ যেভাবে দেয়া হবে ঠিক সেভাবে কাজ করা হবে। ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মজনু জানান, পৌর নির্বাচনে জেলায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র দেয়া হবে। সেজন্য কাজ চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ জানুয়ারি ২০১৬/শরীফ
