পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবীতে তিন পার্বত্য জেলা-উপজেলা সদরে গণ-মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ( জেএসএস) সমর্থিত সংগঠনগুলো। আজ সোমবার সকাল ১০টায় রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের জেলা-উপজেলা সদরে গণ-মানববন্ধন অংশ নেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম (পার্বত্য চট্টগ্রাম শাখা) ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংঞতি সমিতি ( জেএসএস) নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এসময় বিভিন্ন দাবী সম্মলিত ব্যানার ফ্যাস্টুন নিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন বয়সের শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে।
রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম (পার্বত্য চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি আহবায়ক গৌতম দেওয়ান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে সদস্য নিরূপা দেওয়ান, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে ওই সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছরেও সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো আগ্রহ প্রকাশ করেনি। ভবিষ্যতে এ চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন এখন পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের মনে। সরকারের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলেন ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনীয় সনদ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা। কিন্তু কবে এ সনদ বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুনিদষ্টি ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তাই পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ এখন হতাশ। পাহাড়ের জুম্মজাতিরা এখন আর সরকারের উপর বিশ্বাস রাখেনা। তারা মনে করে সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন না করলে, আন্দোলনের মধ্যমে সরকারকে চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করা হবে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে আর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুমকি দেন ওই সংগঠনের নেতারা।
অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দাবিতে সন্তু লারমার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম (পার্বত্য চট্টগ্রাম শাখা) ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের উদ্যোগে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাঙামাটি জেলার বাঙ্গালহালিয়া, বরইছড়ি, কাপ্তাই, ঘাগড়া, রাঙামাটি সদর, মানিকছড়ি, ঘিলাছড়ি, সাবেক্ষ্যং ইউপি। খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি ইউপি, মাচ্ছ্যছড়া, বিজিতলা, খাগড়াছড়ি সদর, পেরাছড়া, ভাইবোনছড়া, লতিবান, পানছড়ি সদর, পুজগাং, দুদুকছড়া। বান্দরবান জেলার ঘুনধুম, নাইক্ষ্যংছড়ি, বাইশারী, গয়ালমারা, লাইমঝিরি (লামা), গজালিয়া, ১৬ মাইল (চিম্বুক), বান্দরবান সদর, বালাঘাটা, ডুলুপাড়া, আমতলী সড়কে গণ-মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বর্ষপূতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতির সভাপতি ও সাবেক শান্তিবাহিনীর নেতা সন্তু লারমা ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দাবিতে গণ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। আর এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণ-মানববন্ধ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ জানুয়ারি ২০১৬/শরীফ