বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভগের বিচারপতি, সাবেক ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক মোঃ বজলুর রহমান ছানার দাফন সোমবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে দুপুরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে তার লাশ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আনা হয়।
বিকেল সাড়ে ৪টার সময় সেন্ট্রাল ঈদগাহ ময়দানে জানাজার নামাজ শেষে খালঘাট গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগের ঊর্ধতন কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ বিপুল পরিমাণ লোকের সমাগম হয়।
বিচারপতি বজলুর রহমান ছানা রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি বজলুর রহমান ছানা ১৯৫৫ সালের ১২ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজার গোয়ালপাড়া মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ইউনুস বিশ্বাস এবং মাতা মরহুমা বাদেনুর নেসা। তিনি ১৯৭০ সালে নবাবগঞ্জ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭২ সালে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। মেধাবী ছাত্র বজলুর রহমান ছানা ১৯৭৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ থেকে Jurisprudence বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৭৭ সালে একই বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮২ সালে সমাজ বিজ্ঞানে বিভাগ থেকেও তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।
তৎকালীন বৃহত্তর রাজশাহী তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম সাবেক ছাত্রনেতা বজলুর রহমান ছানা ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি তৎকালীন নবাবগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগ ও আশির দশকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৮০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন। পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসনামলে ১৯৭৮ ও ১৯৭৯-৮০ সালে বিবর্তনমূলক আটকাদেশে কারাবরণ করেন তিনি। ১৯৮৩ সালের বিশেষ সামরিক শাসনামলে সামরিক আদালতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরবর্তীতে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন সামরিক জান্তা মামলাটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।