রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় প্রায় ২৪০ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিতের অভিযোগ উঠেছে নুরুল হুদা কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এদিকে, উপবৃত্তিতে নাম অন্তর্ভুক্তি না করায় শিক্ষা ব্যবস্থা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পাহাড়ের এ সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
সরকার শিক্ষা সহায়তায় সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন স্টাইপেন্ড প্রজেক্ট (এসইএসপি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর অপেক্ষাকৃত দরিদ্র-প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে উপবৃত্তি প্রদান করে আসছে। কিন্তু অতীতে এর সুফল কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পেলেও এবার বঞ্চিত হতে হল তাদের। এর দায়ভার ও জবাবদিহিতার জন্য অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে ২০১৬ সালের ১ আগস্ট কাপ্তাই উপজেলা ভারপাপ্ত শিক্ষা অফিস সৈয়দ মাহমুদ হাসান স্বাক্ষরিত এক কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে সেকায়েপ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি সুবিধা কেন গ্রহণ করবে না মর্মে জানতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়া নিজ ভুল স্বীকার করেন। তবে সরকারের দেয়া সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা দিতে সরকার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সেকায়েপ প্রকল্পে দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের তালিকাভুক্ত করে উপবৃত্তির সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। নুরুল হুদা কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ সুযোগটি পেয়ে আসছে। কিন্তু হঠাৎ নাম অন্তর্ভুক্তি বন্ধ করে দেয়ায় এবার বিদ্যালয়টির প্রায় ২৪০ জন শিক্ষার্থী বঞ্চিত হয়েছে উপবৃত্তির সুবিধা থেকে। প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়ার ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত না থাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, সরকার প্রতিটি স্কুলে প্রতি শ্রেণিতে ৪০ ভাগ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির সুবিধা দিয়ে আসছে। এ আগে কাদেরী স্কুলের ১১৬ উপকারভোগী শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অনলাইনে উপবৃত্তির টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া চালু করায় রহস্যজনকভাবে কাদেরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়া এর বিরোধিতা করেন। ফলে এবার বিদ্যালয়টির প্রায় ২৪০ জন ছাত্রছাত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় এক বছর ৬ মাসের উপবৃত্তির টাকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে তারা।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির জন্য নিজ নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে আট মাস আগে থেকে একাধিকবার সরকারিভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাদেরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে অবহেলা করে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি নির্দেশনার উপেক্ষা করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কাপ্তাই উপজেলা বরইছড়ি কর্ণফুলী নুরুল হুদা কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়া জানান, আমি ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদনের মাধ্যমে আমার ভুল হওয়ার কারণে ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি না পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে অবহিত করি এবং আগামীতে আর কোনো অবহেলা হবে না মর্মে প্রতিশ্রুতি দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব